রাজেন্দ্রের একজন শান্ত স্বভাবের কর্মচারী, যিনি বেরিলির একটি ব্যাংকে কাজ করতেন। তার জীবন চলছিল নির্দিষ্ট নিয়মে৷ সকালবেলা ব্যাংকের কাজ, সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরা, আর একইরকম নীরব রাত। কিন্তু তার বাড়ির চার দেয়ালের ভেতর অন্য এক গল্প গড়ে উঠছিল, যা তার চোখের আড়ালে ছিল।
advertisement
রাজেন্দ্রের স্ত্রী, যিনি একসময় তার পুরো পৃথিবী ছিলেন, এখন যেন সেই জগতের বাইরে অন্য কোথাও হারিয়ে গিয়েছিলেন। একদিন হঠাৎ অফিস থেকে ফিরে এসে রাজেন্দ্র বাড়ির ভেতর থেকে কিছু অদ্ভুত শব্দ শুনতে পান। কৌতূহলী হয়ে তিনি জানালার ফাঁক দিয়ে উঁকি দেন, আর সেই মুহূর্তেই যেন তার গোটা দুনিয়া ভেঙে পড়ে। তিনি বুঝতে পারেন, তার স্ত্রী কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন।
এই সম্পর্কের শুরু হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। রাজেন্দ্র যখন এ বিষয়ে জানতে পারেন, তখন তিনি স্ত্রীর সঙ্গে বহুবার কথা বলার চেষ্টা করেন। সংসারের সম্মান, সম্পর্কের গুরুত্ব—সব বোঝাতে চান। কিন্তু তার স্ত্রী ততদিনে অন্য কারও প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছিলেন। প্রতিবার মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে রাজেন্দ্র নিজেকে সামলে নিতেন, কিন্তু পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে থাকে।
একসময় রাজেন্দ্রের স্ত্রীর প্রেমিক তাকে সরাসরি হুমকি দিতে শুরু করে। “তুমি যদি আমাদের মাঝে বাধা হও, তাহলে তোমার জন্য খারাপ হবে,”—এমন কথাগুলো রাজেন্দ্রের কানে প্রতিনিয়ত বাজতে থাকে। ক্রমাগত মানসিক চাপে রাজেন্দ্র দিশেহারা হয়ে পড়েন। একদিকে পরিবারের ভাঙন, অন্যদিকে জীবন নিয়ে শঙ্কা—সব মিলিয়ে তিনি ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়েন।
আরও পড়ুন: পাসপোর্টের নিয়মে বিশেষ পরিবর্তন, এখন থেকে ‘এই’ সার্টিফিকেট মাস্ট, জানুন…
অবশেষে, একদিন রাজেন্দ্র এমন এক কঠিন সিদ্ধান্ত নেন, যেখানে ফিরে আসার আর কোনো উপায় নেই। সামাজিক লজ্জা ও হুমকির ভয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। তার পরিবারের অভিযোগ, স্ত্রীর প্রেমিকই তাকে এই পথে ঠেলে দিয়েছে। ক্রমাগত মানসিক চাপ, হুমকি, অপমান সব মিলিয়ে রাজেন্দ্রকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে।
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে বিথরি চৈনপুর থানার নওদিয়া গ্রামে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং তদন্ত শুরু করে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—একসময় যে স্ত্রী ভালোবাসা ও বিশ্বাসের প্রতীক ছিলেন, তিনি কেন হঠাৎ বদলে গেলেন? এটি কি শুধুই একজনের ভুল, নাকি পুরো পরিবার ধ্বংসের পেছনে আরও গভীর কোনও সত্য লুকিয়ে আছে?
রাজেন্দ্রের এই করুণ গল্প আজও সেই গলিতে প্রতিধ্বনিত হয়, যেখানে তিনি একসময় তার সম্পর্ককে নতুন রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এখন দেখার বিষয়, এই ঘটনার শেষ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়৷ তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷