পুলিশ সূত্রে খবর, পুলিশ সেজে মানুষকে মামলায় জড়ানোর হুমকি দিচ্ছিল সে। সেই সঙ্গে সাইবার জালিয়াতির মাধ্যমে অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করানোরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এক প্রতারক চক্রের সদস্য সে। অভিযুক্তের কাছ থেকে আটটি মোবাইল ফোন, পাঁচটি আধার কার্ড, তিনটি এটিএম কার্ড এবং ১১ লক্ষ টাকা নগদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই প্রতারক চক্রটির উপর নজর রাখছিল হাথরস পুলিশ, সাইবার সেল এবং সারভেইল্যান্স সেল।
advertisement
আরও পড়ুন– রাশিফল ২৬ ফেব্রুয়ারি-৩ মার্চ; দেখে নিন এই সপ্তাহ নিয়ে কী জানাচ্ছেন জ্যোতিষী চিরাগ
গত ৬ জানুয়ারি, ২০২৪ তারিখে সঞ্জয় কুমার আগরওয়াল নিজের মোবাইলে একটি হোয়াটসঅ্যাপ কল পেয়েছিলেন। ফোন ধরতেই ওপার থেকে একজন বলেন যে, তাঁর ছেলে এমন একটি অপরাধ করেছে। যার জন্য তাঁকে টাকা দিতে হবে। আতঙ্কিত হয়ে সঞ্জয় প্রায় ১২ লক্ষ টাকা অনলাইনে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেন। তাঁর ছেলে কোটায় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে পরে সঞ্জয় জানতে পারেন যে, তাঁর ছেলে কোনও অপরাধ করেইনি। ফলে বুঝতে পারেন যে, তিনি সাইবার প্রতারণার শিকার হয়েছেন। হাথরস জেলার কোতোয়ালি নগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। নড়েচড়ে বসে পুলিশ। কোতোয়ালি নগরের ইনচার্জ ইনস্পেক্টর এবং সাইবার সেল টিমের উপর দায়িত্ব পড়ে। এসডব্লিউএটি এবং নজরদারি টিমও মোতায়েন হয়েছিল। বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখার পর ওই চক্রের এক সদস্যকে হাতিসা সেতুর কাছ থেকে গ্রেফতার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত জানায় যে, দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে সে। মধ্যপ্রদেশের ভোপালের কলার কলোনি সরেশ নগরের বাসিন্দা অন্তর সিং যাদবের ছেলে সে। নাম বিবেক যাদব। তার আলাপ হয়েছিল সাগর ঘোসলে এবং রচিতের সঙ্গে। তারা কিছু অ্যাকাউন্ট খোলার দায়িত্ব দেয় বিবেকের উপরে। বিবেক এবং তার দলবল নকল পুলিশকর্মী সেজে হাথরসের এক ব্যক্তির তথ্য বার করে। এরপর ওই ব্যক্তির ছেলে অপরাধ করেছে বলে তাঁর থেকে ১২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। সেই টাকা সঞ্জয়কে দিয়ে নেট ব্যাঙ্কিং এবং ইউপিআই-এর মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে নেয় বিবেকরা। এরপর সেই টাকা তুলে নিয়ে মথুরা যাচ্ছিল সে।
ধৃত ওই যুবক আরও জানিয়েছে যে, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে কোটার পড়ুয়াদের পরিবার সম্পর্কে তথ্য খুঁজে বার করেছিল ওই চক্রটি। এরপর তারা মানুষকে ভয় দেখাত এবং নকল পুলিশকর্মী সেজে তাঁদের টাকা হাতিয়ে নিত। শুধু তা-ই নয়, অভিযুক্তরা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কিনত। অন্য অ্যাকাউন্টধারীদের পাসবুক, এটিএম কার্ড এবং মোবাইল নম্বরও সঙ্গে রাখত তারা। যাতে পুলিশ তাদের নাগাল না পায়। এই কাজের জন্য পুলিশের উদ্দেশ্যে ২৫ হাজার টাকা নগদ পুরস্কার ঘোষণা করেন হাথরসের এসপি নিপুণ আগরওয়াল। তিনি বলেন, অভিযুক্তরা পুলিশ অফিসারদের ডিপি ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ কল করেছিল। অভিযুক্ত যুবক এর আগেও বেশ কয়েকবার জেল খেটেছে।