Read:- Moneycontrol EXCLUSIVE: ‘India’s Growth is Good for the World’: PM Modi’s Interview
আসলে জি২০ ট্রয়িকা হল তিনটি দেশের একটি গোষ্ঠী। মূলত পূর্ববর্তী, বর্তমান এবং পরবর্তী জি২০ প্রেসিডেন্সিগুলির উপর ভিত্তি করে এই গোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে ভারত ২০টি নেতৃত্বস্থানীয় অর্থনীতি গোষ্ঠীর আসনে আসীন রয়েছে। এই দেশের পূর্বসূরি ছিল ইন্দোনেশিয়া এবং এর উত্তরসূরি হল ব্রাজিল।
advertisement
আগামী ৯-১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে হবে এই অধিবেশন। নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের জন্য জি২০ রাষ্ট্রপ্রধানদের হোস্ট করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সাক্ষাৎকারে মোদি বলেন, জি২০-র ইতিহাসে প্রথম বারের জন্য উন্নয়নশীল বিশ্ব — ইন্দোনেশিয়া, ভারত এবং ব্রাজিলের সঙ্গেই রয়েছে ট্রয়িকা। ফলে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যখন বিশ্বব্যাপী ভূ-রাজনৈতিক কারণে অশান্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন এই ট্রয়িকা উন্নয়নশীল বিশ্বের কণ্ঠস্বরকে আরও জোরালো করে তুলতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে এও জানান যে, গ্লোবাল সাউথের পক্ষে দাঁড়িয়েছে ভারত। আর সেই সঙ্গে গ্লোবাল সাউথের উদ্বেগের বিষয়গুলি জি২০-সহ সমস্ত বহুপাক্ষিক ফোরামে তুলেও ধরছে। তিনি আরও বলেন, “এগুলি এমন দেশ, যাদের প্রতি আমরা অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। আমরাও যেহেতু উন্নতিশীল বিশ্বের অংশ, তাই আমরা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার বিষয়টা বুঝতে পারি।”
নরেন্দ্র মোদি আরও একটি বিষয় তুলে ধরেছেন। জানিয়েছেন যে, “আমরা যে মুহূর্তে জি২০-র প্রেসিডেন্ট হয়েছি, তখনই আমরা ভয়েস অফ গ্লোবাল সাউথ সামিট-এর আয়োজন করেছিলাম। আর এর মাধ্যমে এটাই স্পষ্ট হয়েছিল যে, যারা বিশ্বব্যাপী আলোচনা এবং প্রাতিষ্ঠানিক অগ্রাধিকার থেকে বাদ পড়েছে, তাদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমরা একটা কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছিলাম।” তাঁর আরও সংযোজন, জি২০-র আসন হিসেবে ভারত সদস্য দেশগুলির স্বার্থের বিষয়ে তো প্রতিনিধিত্ব করেছেই, সেই সঙ্গে যে দেশগুলি জি২০-তে উপস্থিত নয় অর্থাৎ আফ্রিকা ইউনিয়নের মতো দেশগুলির স্বার্থের বিষয়কেও এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে।
ইক্যুইটেবল ট্রেড বা ন্যায়সঙ্গত বাণিজ্যের পাশে:
এই প্রসঙ্গে ওই সাক্ষাৎকারে মোদি বলেন, ইক্যুইটেবল ট্রেড পলিসি বা ন্যায়সঙ্গত বাণিজ্য নীতিগুলি নিশ্চিত রূপেই জি২০-তে জোর দেওয়ার একটা মূল ক্ষেত্র। আর এটা দীর্ঘ মেয়াদে সরাসরি ভাবেই সমগ্র বিশ্বকে উপকৃত করবে। জি২০ প্রেসিডেন্সির অংশ হিসেবে ভারত এমন কর্মসূচিকে সমর্থন করে, যা স্থিতিশীল, স্বচ্ছ এবং ন্যায্য বাণিজ্য ব্যবস্থাকে উন্নীত করে। আর এটা প্রত্যেককেই উপকৃত করবে। তাঁর আরও সংযোজন, ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন (ডব্লিউটিও)-এর মূল অংশে বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি ডব্লিউটিও নীতিগুলিতে শক্তিশালী করা, বিরোধ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া পুনরুদ্ধার করা এবং নতুন পারস্পরিক উপযোগী ডব্লিউটিও চুক্তির সমাধানের মতো প্রয়োজনীয় সংস্কারের কাজ করতেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ডব্লিউটিও নীতি শক্তিশালী করার বিষয়ে মোদি আরও জানান যে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গণতন্ত্রীকরণের প্রয়োজন রয়েছে। এর পাশাপাশি সরকার-সরকার সম্পর্ককে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম না করাই উচিত।
ইক্যুইটেবল ট্রেডের উপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলির ঋণ সংক্রান্ত দুর্বলতার বিষয়ে যে উদ্বেগ, সেটাকেও তুলে ধরেছে ভারত। এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, “ঋণ বিধ্বস্ত দেশগুলির জন্য সমণ্বিত ঋণ ব্যবস্থার সুবিধার্থে আমরা বহুপাক্ষিক সমন্বয়কে আরও জোরদার করার কাজ করে চলেছি।”
উন্নতির সুযোগ:
অন্যান্য বহুপাক্ষিক ফোরামের মতো জি২০-র উন্নতির সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। অবশ্য এর সঙ্গে তাঁর সংযোজন, আসন হিসেবে ভারতের জন্য তার কর্মক্ষমতার মূল্যায়ন করা উচিত হবে না। তিনি বলেন, শীঘ্রই প্রতিষ্ঠার পঁচিশ বছরের কাছাকাছি চলে আসছে জি২০। ফলে জি২০ কোন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে এবং তা অর্জন করতে কত দূর সক্ষম হয়েছে, সেই বিষয়টা মূল্যায়ন করার একটা ভাল সুযোগ দেবে এমন একটা মাইলফলক। আর এই ধরনের আত্মদর্শন কিন্তু প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্যই প্রয়োজনীয়।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যে সময় জি২০ পঁচিশ বছরের মাইলফলকে পা দেবে, সেই সময় জি২০-র বাইরে থাকা দেশগুলির দৃষ্টিভঙ্গি এবং মতামত জানতে চাওয়াটাও কিন্তু একটা ভাল আইডিয়া। বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথের থেকে। আসলে এই ধরনের ইনপুটগুলি অত্যন্ত মূল্যবান হবে। কারণ এর মাধ্যমেই পরবর্তী ২৫ বছরের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।