গুজরাট সরকারের ইনস্টিটিউট অফ সিসমোলজিক্যাল রিসার্চ-এর তথ্য অনুযায়ী, এই ভূমিকম্প আজ সকাল ১০টা ১২ মিনিটে আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩.২ এবং এর গভীরতা ছিল ৬.৪ কিলোমিটার। কেন্দ্রস্থল ছিল আমরেলি। যদিও এতে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, তবে মাত্র দুদিনের মধ্যে পরপর দুটি ভূমিকম্প ঘটায় মানুষ বেশ আতঙ্কিত।
advertisement
এর আগে, মঙ্গলবার গুজরাটের কচ্ছ জেলায় দুটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়। প্রথম ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩.০ এবং দ্বিতীয়টির মাত্রা ছিল ২.৮। ইনস্টিটিউট অফ সিসমোলজিক্যাল রিসার্চ (ISR) এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবারের ভূমিকম্পেও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
গান্ধীনগরে অবস্থিত ভূমিকম্প গবেষণা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল ১১টা ১২ মিনিটে কচ্ছ জেলায় প্রথম ভূমিকম্প হয়, যার মাত্রা ছিল ৩.০ এবং কেন্দ্র ছিল রাপার শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে। এক মিনিট আগেই ২.৮ মাত্রার একটি কম্পন অনুভূত হয়, যার কেন্দ্র ছিল ভচাউ থেকে উত্তর-উত্তর-পূর্বে।
কচ্ছ জেলা ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা – ভূমিকম্পের দিক থেকে কচ্ছ জেলা অত্যন্ত বিপজ্জনক অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত। এখানে প্রায়ই ছোটো মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ২০০১ সালের জানুয়ারিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে কচ্ছ জেলায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছিল। সেই ভূমিকম্পে প্রায় ১৩,৮০০ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন এবং ১.৬৭ লক্ষের বেশি মানুষ আহত হয়েছিলেন। তখন শহর ও গ্রামগুলোর অবকাঠামোর মারাত্মক ক্ষতি হয়েছিল।
বর্তমান পরিস্থিতিতে, যদিও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই, তবে বারবার ভূমিকম্প হওয়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা পরবর্তী কয়েকদিন সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
ভূমিকম্পের সময় কী করবেন – যদি ভূমিকম্পের সময় আপনি ঘরের ভেতরে থাকেন, সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে বসে পড়ুন, মজবুত টেবিল বা ডেস্কের নিচে আশ্রয় নিন এবং শক্ত করে ধরে রাখুন যতক্ষণ না কম্পন বন্ধ হয়। জানালা, আয়না এবং ভারী আসবাবপত্র থেকে দূরে থাকুন, কারণ সেগুলো পড়ে গিয়ে আহত করতে পারে। বাইরে দৌড়াবেন না, কারণ ভবন থেকে পড়তে থাকা ধ্বংসাবশেষ বিপজ্জনক হতে পারে।
যদি বাইরে থাকেন, খোলা জায়গায় যান – যদি আপনি ভূমিকম্পের সময় বাইরে থাকেন, তাহলে ভবন, ল্যাম্পপোস্ট ও বৈদ্যুতিক তারের কাছ থেকে সরে যান। নিরাপদ খোলা জায়গা খুঁজে সেখানে অবস্থান করুন যতক্ষণ না কম্পন বন্ধ হয়। গাছ বা দেওয়ালের নিচে দাঁড়াবেন না, কারণ সেগুলো হঠাৎ ভেঙে পড়তে পারে। যদি আপনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তবে নিরাপদ জায়গায় থেমে যান, কিন্তু সেতু বা ফ্লাইওভারের নিচে থামবেন না।
শান্ত থাকুন এবং আফটারশকের জন্য প্রস্তুত থাকুন – ভূমিকম্পের পরে আফটারশক (পরবর্তী কম্পন) হতে পারে, যা আরও ক্ষতি করতে পারে। তাই সতর্ক থাকুন এবং আবারও আশ্রয় নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন। কম্পন বন্ধ হলে, নিজে এবং আশপাশের মানুষের চোট বা আঘাত পরীক্ষা করুন এবং জরুরি নির্দেশনা অনুসরণ করুন। যদি গ্যাসের গন্ধ পান বা ভবনের ক্ষতির সন্দেহ হয়, তবে দ্রুত বাইরে বেরিয়ে যান এবং জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যোগাযোগ করুন।