ভারত আত্মনির্ভরতার পথে প্রতিরক্ষা খাতে একের পর এক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশীয় ফাইটার জেট তৈরির প্রকল্প— তেজস। একইসঙ্গে ভবিষ্যতের ৫ম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরির জন্য AMCA প্রকল্পও শুরু হয়েছে।
তেজস প্রকল্পের অধীনে ভারত একাধিক আপগ্রেডেড ভ্যারিয়েন্ট তৈরি করছে। এর মধ্যে তেজস এমকে-১এ সবচেয়ে বিশেষ। প্রযুক্তি আর আধুনিকতার দিক থেকে এটি আমেরিকার F-16 বা রাশিয়ার Su-30-কেও পিছনে ফেলবে। অনেক চিনা ফাইটার জেট তো তেজস এমকে-১এ-র সামনে দাঁড়াতেই পারবে না।
advertisement
দেশি ‘মহাবলী’ শত্রু গন্ধ পাবে ১৬০ কিমি দূর থেকে, থাকছে ব্রহ্মোস-এনজি-র শক্তি, মারক ক্ষমতায় হার মানাবে F-16, Su-30
নজর কাড়বে রাডার ক্ষমতা
EL/M-2052 AESA রাডার লাগানো তেজস ৫ মি² RCS-এর টার্গেট ধরতে পারবে ১৫০–১৬০ কিমি দূর থেকে। এমনকি ১ মি² ছোট RCS-এর টার্গেটও ১১০–১২০ কিমি দূরে শনাক্ত করতে সক্ষম। পাকিস্তানের JF-17 Block III বা চিনের J-10C এখানে অনেক বেশি দৃশ্যমান, আর রাশিয়ার Su-30/J-11/J-16 তো আরও বড় রাডার ক্রস সেকশন নিয়ে উড়ে। ফলে তেজস আগে শত্রুকে দেখতে পাবে, আঘাত হানবে, অথচ নিজেকে গোপন রাখতে পারবে।
ফ্রন্টলাইন ডিপ্লয়মেন্ট
ভারতীয় বায়ুসেনা রাজস্থানের নাল, গুজরাতের নালিয়া আর লাদাখের লেহ-তে তেজস স্কোয়াড্রন মোতায়েন করছে। মরুভূমি, উপকূল, পাহাড়—তিন পরিবেশেই এর কার্যক্ষমতা প্রমাণিত। মানে, এটি শুধুই ট্রায়াল নয়, বরং ফ্রন্টলাইনে সক্রিয় ভূমিকা নিতে চলেছে।
মারক অস্ত্রসম্ভার
- BVR কমব্যাট: অস্ট্রা এমকে-১ মিসাইল (রেঞ্জ ১১০ কিমি)
- WVR কমব্যাট: পাইথন-৫, ASRAAM (রেঞ্জ ২০–২৫ কিমি)
- ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার: এলটা EL/M 8222 জ্যামিং পড
- SEAD/DEAD মিশন: NGARM (১০০ কিমির বেশি), ব্রহ্মোস-এনজি
- প্রিসিশন স্ট্রাইক: স্পাইস-২০০০ বোমা, SAAW (রেঞ্জ ১০০ কিমি), লাইটনিং টার্গেটিং পড
কর্মক্ষমতা ও যুদ্ধশক্তি
তেজস সর্বোচ্চ ম্যাক ১.৬ গতিতে উড়তে পারে, ৩,৫০০ কেজি পর্যন্ত পে-লোড বহন করতে পারে। ডিজিটাল ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম আর দ্রুত টার্ন নেওয়ার ক্ষমতা একে ক্লোজ-ডগফাইটেও ভয়ঙ্কর করে তোলে। এর ৪০%-এর বেশি অংশ কম্পোজিট মেটেরিয়াল দিয়ে তৈরি, ফলে ওজন কম এবং স্টেলথ ক্ষমতা বেশি।
সবচেয়ে বড় শক্তি হল এর মাল্টি-রোল সক্ষমতা— একইসঙ্গে ইন্টারসেপশন, ডিপ স্ট্রাইক আর রিকন মিশন চালাতে পারে। পুরনো মিগ-২১ বা জাগুয়ারের সেই ক্ষমতা নেই। তেজস শুধু মিগ-২১-এর রিপ্লেসমেন্ট নয়, বরং আগামী তিন দশকের জন্য ভারতের লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট।