জেরা–পর্বে অন্যতম অভিযুক্ত মুজাম্মিল গণাই জানিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে, কী ভাবে এই টাকা ধীরে ধীরে তোলা হয়। গণাই নাকি ৫ লক্ষ টাকা দেন। আদিল আহমদ রাথর এবং তাঁর ভাই মুজাফ্ফর আহমদ রাথর যথাক্রমে ৮ লক্ষ এবং ৬ লক্ষ টাকা দেন বলে অভিযোগ। আরও এক চিকিৎসক শাহিন শাহিদ ৫ লক্ষ টাকা এবং ড. উমর উন–নবি মহম্মদ ২ লক্ষ টাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তদন্তকারীদের দাবি, সমস্ত অর্থই শেষ পর্যন্ত উমরের হাতে তুলে দেওয়া হয়, যা তাঁর কেন্দ্রীয় ভূমিকার ইঙ্গিত দেয়।
advertisement
তদন্তে উঠে এসেছে, প্রায় দুই বছর ধরে এই গোষ্ঠী বিস্ফোরক এবং রিমোট–ট্রিগারিং ডিভাইস সংগ্রহ করেছে। এনআইএ–র এক আধিকারিকের কথায়, “রাতারাতি বিস্ফোরক তৈরি হচ্ছিল না; পুরো বিষয়টাই অত্যন্ত পরিকল্পিত।”
অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট–ইউরিয়া সংগ্রহ
গণাই–এর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গুরুগ্রাম এবং নুহ থেকে প্রায় ৩ লক্ষ টাকায় ২৬ কুইন্টাল এনপিকে সার সংগ্রহ করেন। অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও ইউরিয়ার মজুতসহ এই সার উমরের তত্ত্বাবধানে বিস্ফোরক প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়েছে বলে এনআইএ–র দাবি। উমর রিমোট ডেটোনেটর এবং ইলেকট্রনিক সার্কিটও জোগাড় করেছিলেন বলে অভিযোগ, যা এই মডিউলের দায়িত্ব–বিভাজনকে স্পষ্ট করে।
এখন পর্যন্ত তিন চিকিৎসক— গণাই, শাহিদ ও আদিল রাথর— গ্রেফতার হয়েছে। মুজাফ্ফর রাথর আফগানিস্তানে পালিয়ে রয়েছে বলে ধারণা, যা তাকে দেশে আনা আরও কঠিন করে তুলেছে।
তদন্তকারীরা নিসার উল–হাসানকেও খুঁজছেন। তিনি আল–ফলাহ মেডিক্যাল কলেজের সহকর্মী, যেখানে বেশ কয়েকজন অভিযুক্ত একসঙ্গে কাজ করতেন। অন্যদিকে উমরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ১০ নভেম্বর লালকেল্লার কাছে হিউন্ডাই আই২০ গাড়িতে থাকা বিস্ফোরক ভান্ডারটি তিনিই ডেটোনেট করেন এবং বিস্ফোরণের পর অল্পের জন্য নিরাপত্তা রক্ষীদের চোখ এড়িয়ে যান।
এনআইএ কী করছে?
এনআইএ সূত্রের দাবি, অভিযুক্তদের দেওয়া বয়ান তদন্তকে কয়েকটি ছিন্নসূত্র জোড়া লাগাতে সাহায্য করেছে। বিপুল পরিমাণ উদ্ধার হওয়া রাসায়নিক ও উপকরণ দেখে তদন্তকারীদের সন্দেহ আরও জোরদার হয়েছে যে পরিকল্পনা ছিল ধারাবাহিক বিস্ফোরণের। এক আধিকারিকের কথায়, “এতটা মজুত একটিমাত্র বিস্ফোরণে খরচ হওয়ার নয়।”
তবে তদন্তকারীরা জোর দিয়ে বলেছেন, কোনও স্বীকারোক্তি কেবল ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দেওয়া হলে তবেই আইনত বৈধ বলে গণ্য হবে। এখন সংস্থার লক্ষ্য হল upstream–এ কারা সরবরাহ করেছে তা খুঁজে বের করা, চিকিৎসকরা তাঁদের পেশাগত পরিচয় অপব্যবহার করেছেন কি না তা যাচাই করা, এবং গোটা নেটওয়ার্কের প্রতিটি স্তরকে শনাক্ত করা।
এনআইএ–র এক আধিকারিক বলেন, “এটি স্পষ্টতই এক গভীরে ঢুকে থাকা মডিউল, যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আড়ালে কাজ করছিল। এখন লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিটি নোডকে উদ্ঘাটন করা।”
