এই দিন নয়াদিল্লির এয়ার কোয়ালিটি বা বাতাসের মান সবথেকে খারাপ মাত্রায় চলে গিয়েছে। দেখা যায় যে, রাজধানীর একাধিক জায়গায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই ৪০০-য় পৌঁছে গিয়েছে। বুধবারও একই অবস্থা ছিল দেশের রাজধানী শহরে। কারণ তখনও সেখানকার একিউআই বৃদ্ধি পেয়ে পৌঁছে গিয়েছিল ৪২৯-এ।
আরও পড়ুনঃ প্রতি সিজেনে বাচ্চার জ্বর-সর্দি কাশি হচ্ছে? আজই শুরু করুন এই ৪ কাজ, সন্তান সারাবছর থাকবে চনমনে
advertisement
বৃহস্পতিবার দেখা যায় যে, আনন্দ বিহারের একিউআই রেকর্ড করা হয়েছে ৪৭৩। সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড বা সিপিসিবি-র তরফে জানানো হয়েছে যে, আলিপুরে ৪২৪, আয়া নগরে ৪২৪, অশোক বিহারে ৪৭১, ইন্দিরা গান্ধি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ৩-তে ৪৩৬, চাঁদনি চকে ৪০৫, দ্বারকা সেক্টর ৮-এ ৪৫৭, জাহাঙ্গিরপুরিতে ৪৭০, জেএনএস-এ ৪১২, নারেলায় ৪৪০ এবং নেহরু নগরে ৪৬২ ছিল একিউআই।
এখানেই শেষ নয়, পটপরগঞ্জে ৪৭২, ওখলা ফেজ ২-এ ৪৪১, পঞ্জাবি বাগে ৪৫৯, আরকে পুরমে ৪৫৭, পুসা-য় ৪০৮, রোহিণীতে ৪৫৩, শাদিপুরে ৪৩০, ওয়াজিরপুরে ৪৬৭, সোনিয়া বিহারে ৪৪৮ এবং সিরিফোর্টে ৪৪০ ছিল এই দিনের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই।
এরই মাঝে এক উদ্বেগজনক তথ্য জানানো হয়েছে সিপিসিবি-র তরফে। তাদের বক্তব্য, ৪০১ থেকে ৫০০-র মধ্যে একিউআই থাকলে অর্থাৎ এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স সিভিয়ার লেভেলে চলে গেলে তা সকলের জন্যই অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। যার জেরে সুস্থ মানুষদের পর্যন্ত শ্বাসজনিত সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আর যাঁদের আগে থেকেই হার্ট অথবা ফুসফুসের রোগ রয়েছে, তাঁদের তো গুরুতর স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা দেখা দিতেই পারে।
বলাই বাহুল্য যে, দেশের রাজধানীতে দূষণের মাত্রা যেন উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি দেখে পরিবেশ মন্ত্রী গোপাল রাই একটি রিভিউ মিটিং ডেকেছেন। পরিবেশ মন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে যে, বৃহস্পতিবার দিল্লি সেক্রেটারিয়েটের গ্রিন ওয়ার রুমে সমস্ত বিভাগীয় আধিকারিকদের সঙ্গে ওই বৈঠক করবেন পরিবেশ মন্ত্রী।
কম দৃশ্যমানতার কারণে উড়ানে বিলম্ব:
দেশের রাজধানী এবং এর সংলগ্ন এলাকা ইতিমধ্যেই ঘন ধোঁয়াশার চাদরে ঢেকে গিয়েছে। যার জেরে কমেছে দৃশ্যমানতা। ফলে বৃহস্পতিবার বেশ কিছু উড়ান চলাচলে বিলম্ব হয়েছে। এহেন আবহাওয়া এবং প্রতিকূল দৃশ্যমানতার কারণে দিল্লি, বারাণসী আর অমৃতসর থেকে আগত ইন্ডিগো উড়ান এবং এই শহরগামী ইন্ডিগো উড়ানের চলাচলে প্রভাব পড়েছে। এমনটাই ভ্রমণ নির্দেশিকায় জানিয়েছে ওই বিমান সংস্থা।
ইন্ডিগো-র তরফে জানানো হয়েছে যে, “এই দিন সকালে অমৃতসর, বারাণসী ও দিল্লি থেকে আগত উড়ান এবং অমৃতসর, বারাণসী ও দিল্লিগামী উড়ান চলাচলের উপর ব্যাপক ভাবে প্রভাব পড়েছে। তাই বিমান ধরার জন্য বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে নিজেদের ফ্লাইট স্টেটাস দেখতে থাকুন। সেই সঙ্গে হাতে অতিরিক্ত সময় রাখতে হবে। কারণ কম দৃশ্যমানতার কারণে গাড়ি ধীর গতিতে এগোবে। ধৈর্য রাখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আপনার যাত্রা মসৃণ হোক, এটাই আমাদের কামনা।”
দূষণের মাত্রা কেন উত্তরোত্তর বাড়ছে রাজধানী দিল্লিতে?
মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ১৪ দিন ধরে নয়াদিল্লির বাতাসের মান বা এয়ার কোয়ালিটি ছিল ভেরি পুওর খুবই খারাপ। আর এই দূষণের ক্ষেত্রে সবথেকে বড় অবদান রয়েছে গাড়ির ধোঁয়ার। রাজধানী শহরের বায়ুদূষণের মধ্যে ১৫.৪ শতাংশই আসছে গাড়ির ধোঁয়া থেকে।
আরও পড়ুনঃ এক টুকরো আমলকি, ব্যাস! শুধু এই নিয়মে খেলেই ইউরিক অ্যাসিডের টিকি থাকবে না শরীরে
এখানেই শেষ নয়, ফসলের আগাছা পোড়ানোও দিল্লির ঘন ধোঁয়াশার জন্য দায়ী। আসলে দিল্লির আশপাশের রাজ্যগুলিতে প্রতি বছরই এই সময় ফসলের আগাছা পোড়ানো হয়। যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে দিল্লির বাতাসের উপরেও। বিশেষজ্ঞদের মতে, পড়শি রাজ্যগুলিতে ফসলের আগাছা পোড়ানোর জন্যই রাজধানীর বাতাস ধোঁয়াশায় ঢেকে যায়। মূল দূষণকারী পদার্থ PM2.5 এবং PM10-এর মাত্রা এখানকার বাতাসে অনেকটাই বেশি ছিল।
মিনিস্ট্রি অফ আর্থ সায়েন্সেসের অধীনে থাকা এয়ার কোয়ালিটি ওয়ার্নিং সিস্টেম সতর্ক করে জানিয়েছে যে, দূষণকারী পদার্থের কার্যকর বিচ্ছুরণের জন্য বাতাসের ধীর গতির পাশাপাশি আবহাওয়া সংক্রান্ত অবস্থা অত্যন্ত প্রতিকূল থাকবে।