ঘটনাস্থল ঝাঁসির কোতওয়ালি থানার পঞ্চবটী শিব পরিবার কলোনি৷ সেখানকার বাসিন্দা ২৭ বছর বয়সি এক বধূর শ্বশুরবাড়ির তরফে সোমবার জানানো হয় ওই তরুণী আত্মহত্যা করেছেন৷ অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত শুরু করে পুলিশ কথা বলে মৃতার ৪ বছরের মেয়ের সঙ্গে৷ ওই শিশুর আঁকা একটি স্কেচ দেখে পুলিশের ধারণা, তরুণীকে হত্যা করেছে তাঁর স্বামী, পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ সন্দীপ বুধোলিয়া৷ তার পর তরুণীর নিথর দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয় এটা বোঝাতে যে তিনি আত্মহত্যা করেছেন৷
advertisement
পুলিশকে ওই বালিকা জানিয়েছে, ‘‘বাবা মারধর করে মাকে খুন করেছে৷ তার পর বাবা বলে ‘তুমি মরতে চাইলে মরো’৷ এটা বলে এর পর মায়ের মৃতদেহ ঝুলিয়ে মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করে বাবা৷ তার পর মায়ের দেহ নামিয়ে একটি বস্তায় ভরে রাখে৷’’ পুরো ঘটনাটি পুলিশকে স্কেচ করে দেখায় ওই শিশু৷
তার মায়ের উপর যে দীর্ঘ দিন ধরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চলত, সে কথাও পুলিশকে জানিয়েছে ওই শিশু৷ বলেছে, ‘‘আমি বাবাকে একবার বলেছিলাম যে যদি তুমি আমার মায়ের গায়ে হাত দাও, আমি তোমার হাত ভেঙে দেব৷ মাকে মারত বাবা৷ বলত, তোর আর তোর মা-দু’জনেরই মরা উচিত৷’’
মৃতার বাবা পুলিশের কাছে বলেছেন তাঁর মেয়ের সঙ্গে অভিযুক্ত সন্দীপের বিয়ে হয় ২০১৯ সালে৷ কিন্তু তাঁদের সম্পর্কে অশান্তি লেগেই থাকত৷ নিহত তরুণীর বাবার অভিযোগ, ‘‘বিয়েতে আমি ২০ লক্ষ টাকা বরপণ দিয়েছিলাম৷ কিন্তু তার পরও সন্দীপ ও তাঁর পরিবার চাপ দিতেই থাকে৷ একটা গাড়ি চেয়েছিল তারা৷ আমি বলেছিলাম সেটা আমার ক্ষমতার বাইরে৷ এর পরই আমার মেয়ের উপর ওরা অত্যাচার করতে থাকে৷ আমি পুলিশের কাছেও গিয়েছি৷ মধ্যস্থতার পর সমঝোতায় এসেছিলাম দুই পক্ষ৷’’
কিন্তু পরিস্থিতি আরও জটিল হয় ওই তরুণী কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ায়৷ নিহত তরুণীর বাবা বলেন, ‘‘সন্দীপ পুত্রসন্তান চেয়েছিল৷ সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সে এবং তার পরিবার আমার মেয়েকে হাসপাতালে ফেলে রেখে চলে যায়৷ আমি হাসপাতালের বিল মিটিয়ে মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসি৷ এক মাস পর সন্দীপ এসে মেয়ে ও নাতনিকে নিয়ে যায়৷’’
আরও পড়ুন : উৎকর্ষের দৌড়ে আলিপুরদুয়ারের সঙ্গে জোর লড়াই লামডিংয়ের, পিছিয়ে নেই কাটিহারও
তরুণীর বাবা জানান, সোমবার সন্দীপের বাড়ি থেকে তাঁকে প্রথমে জানানো হয় তাঁর মেয়ের শারীরিক অবস্থা গুরুতর৷ তার পর বলা হয় মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন৷ দ্রুত আমি সেখানে পৌঁছে জানতে পারি আমার মেয়ে আর নেই৷
কোতওয়ালি থানার পুলিশ জানিয়েছে তরুণীর মৃত্যুরহস্যের তদন্ত চলছে৷ মৃতার দেহ পাঠানো হয়েছে অটোপ্সির জন্য৷ রিপোর্ট এলে অনেক ধোঁয়াশা কাটবে বলে ধারণা তদন্তকারীদের৷