ইঙ্গিত মিলছিল সকাল থেকেই। দিন গড়াতেই ক্রমশ স্পষ্ট হতে শুরু করল ছবিটা। পূর্ব দিল্লির টুকটাক ওয়ার্ডে জয় ছাড়া মোটের উপরে পাল্লা ভারী ছিল কেজরির আপের দিকেই। শেষে দুপুর ২টো নাগাদ ১২৬-এর ম্যাজিক ফিগার পেরতেই উৎসব শুরু হয়ে যায় আপ শিবিরে। গণনা শেষে, আপ-এর ঝুলিতে যায় ১৩৪টি ওয়ার্ড। ১০৪-এই থমকে যায় বিজেপি। আর অন্যদিকে, ১০-এর কোটাও পেরতে পারেনি কংগ্রেস। অন্যান্য ৩।
advertisement
আপ-এর ম্যাজিক ফিগার ছোঁয়ার খবর সামনে আসতেই নিজের বাসভবন থেকে বেরিয়ে দলীয় কার্যালয়ের উদ্দেশে রওনা দেন আম আদমি পার্টির মুখ্য আহ্বায়ক তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তারপরে তিনি কার্যালয়ে পৌঁছতেই নতুন করে উৎসবে মাতেন আপ-এর নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: ক্ষমতায় আসছে কংগ্রেস, হিমাচলে ব্যতিক্রমী এক্সিট পোল ইন্ডিয়া টুডে-অ্যাক্সিস-এর!
প্রথমে এই জয়ের কারিগর হিসাবে নিজের দলের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান কেজরি। তাঁর পাশে তখন দাঁড়িয়ে আপ-এর অন্যতম দুই প্রধান মুখ মণীশ সিসোদিয়া এবং ভগবন্ত সিং মান। কর্মী সমর্থকদের সামনে মঞ্চে দাঁড়িয়ে কেজরি বলেন, "যাঁরা জিতেছেন, তাঁদের অভিনন্দন। কিন্তু, যাঁরা পরাজিত হয়েছেন তাঁরা মনখারাপ করবেন না। আপনাদের সঙ্গে নিয়েই আমরা আরও উন্নততর দিল্লি গড়ে তুলব।"
এর পরেই যাঁরা এমসিডি নির্বাচনে আম আদমি পার্টিকে ভোট দিয়েছেন তাঁদের উদ্দেশে কেজরির বার্তা, "যাঁরা আমাদের ভোট দিয়েছেন, তাঁদের ধন্যবাদ। আর যাঁরা দেননি, জানবেন আপনাদের কাজ সবার আগে হবে।"
জয়ের ইঙ্গিত সামনে আসার পর থেকেই বিজেপির দিকে একের পর এক কটাক্ষ ছুড়ে দিতে থাকেন আপ নেতারা। দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া যেমন ট্যুইট করেন, "আম আদমি পার্টির উপরে ভরসা রাখার জন্য আমরা সাধারণ মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। বিশ্বের সবচেয়ে বড় নেগেটিভ দলকে হঠিয়ে তাঁরা অরবিন্দজির অধ্যাবসায়কে স্বীকৃতি দিয়েছেন।" বিজেপি-কে অহঙ্কারী দল হিসাবে কটাক্ষ করেন অপর এক আপ নেতা সঞ্জয় সিং।
তবে, দিল্লির পুরসভা যে বিজেপির হাতছাড়া হতে চলেছে, বুথ ফেরত সমীক্ষাতেই তার ইঙ্গিত মিলেছিল। প্রায় সব বুথফেরত সমীক্ষাই বলেছিল, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপ ১৪০ থেকে ১৫৬টি আসন পেতে পারে। সেখানে বিজেপি পেতে পারে ৭০ থেকে ৯৫টি আসন। কংগ্রেস ৩ থেকে ১০টি। সেই সমীক্ষার রিপোর্টেই কার্যত সিলমোহর পড়ল বুধবার।
দিল্লি সরকার বিজেপির হাতছাড়া হয়েছিল বছর পঁচিশ আগে। এবার, পুরসভা হাতছাড়া হওয়ায় রাজধানীতে বিজেপির ফিরে আসার সম্ভাবনা এখনকার মতো হারিয়ে গেল বলেই মনে হয়।