তবে এই সর টোস্ট আপনি মূলত চায়ের দোকানেই পেয়ে থাকবেন। তার প্রথম কারণ চা করতে লাগে দুধ। এবং চায়ের দোকানে ক্রমশই দুধ জ্বাল দেওয়ার ফলে দুধের উপর পড়ে মোটা সরের আস্তরণ। সেই সরকে আলতো করে তুলে ফেলা হয়, কোনও একটি পাত্রের মধ্যে। এর পর পাউরুটি ছুরি দিয়ে মাঝখান দিয়ে কেটে করা হয় দু’ভাগ। উনুনের আঁচে কিংবা গ্যাসের আগুনে ভাল করে সেঁকে নেওয়া হয় পাউরুটিগুলি। এর পর তাতে মাখানো হয় পুরু আস্তরণের সর। তার পর তাতে দেওয়া হয় চিনি। এর পর ফের রুটিকে আগুনে ঝলসানো হয় যাতে চিনি সরের মধ্যে গলে যায়। এরপর কাগজে করে পরিবেশন করা হয় এই সুস্বাদু সর টোস্ট। এবং গরম গরম তা খেতেও লাগে অতি চমৎকার।
advertisement
দুধের সরে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং প্রোটিন, তা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকার। যদিও তার মধ্যে থাকা চিনি মুখের স্বাদের জন্য খেলেও শরীরে কতটা উপকারে লাগে তা সকলেরই জানা। তবে যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই সর টোস্ট ক্রমশই বিলুপ্তপ্রায়। তার কারণ প্যাকেটজাত দুধের বাড়বাড়ন্ত। শহরতলির পাশাপাশি গ্রামেগঞ্জেও ঢুকে গেছে বিভিন্ন প্যাকেটবন্দি দুধ। এছাড়াও পাউডার দুধের কথা না হয় বাদই দেওয়া গেল। প্যাকেটের দুধ আগুনে জ্বাল দিলে সেই অর্থে তার মধ্যে সর পড়ে না। তার প্রধান কারণ এই সমস্ত দুধে আগে থেকেই ফ্যাট তুলে নেওয়া থাকে বলে জানা যায়। সেই কারণে এই দুধ জ্বাল দিলে গরুর দুধের মত সর পড়ে না। আর তাই ধীরে ধীরে সর টোস্ট বানানো বন্ধ করে দিচ্ছেন চায়ের দোকানিরা।
তবে এখনও নদিয়া জেলার বেশ কিছু চায়ের দোকানে উঁকি ঝুঁকি দিয়ে খোঁজ নিলে দেখা গেল আদি অনন্তকাল ধরে আজও তাঁরা বানিয়ে চলেছেন এই সর টোস্ট। নদিয়ার নবদ্বীপ ঘাট সংলগ্ন দু’ একটি দোকানে এবং কৃষ্ণগঞ্জ এলাকার মাজদিয়ার এখনও বেশ কিছু পুরনো চায়ের দোকানে আজও পাওয়া যায় অতি সুস্বাদু এই সর টোস্ট। যা খেতে আজও সেই সমস্ত দোকানগুলিতে ভিড় করে আট থেকে আশি সকলেই।