ওই মহিলা জানান, তার বাপের বাড়ি গাংনাপুর শ্বশুরবাড়ি রানাঘাট আঁশতলায়। ২২ বছর আগে পড়াশোনা ছাড়িয়ে বাপের বাড়ির পক্ষ থেকে এক প্রকার জোর করেই বিবাহ দেওয়া হয়। তিনি বরাবরই ধর্ম প্রিয়, আধ্যাত্মিক চেতনা তার মধ্যে। তবে তার স্বামী ঠিক উল্টো, তার পেশা বিভিন্ন কুরুচিকর নাচ গানের অনুষ্ঠান আয়জোন করা। মাঝেমধ্যেই মদ্যপান করে তার ওপর অত্যাচার চালাতেন। অত্যন্ত অভাবী হওয়ার কারণেই এ বিষয়ে বাপের বাড়িতে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।
advertisement
দুই মেয়ের বিবাহ হয়ে যাওয়ার পর অত্যাচারের মাত্রা আরও বাড়তে থাকে, মাথায় জট হয়ে শারীরিক অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তার বাবা চাকদহ শ্যামসুন্দর মন্দিরে সাধু বনমালী গোস্বামীর শরণাপন্ন হলে তিনি তাকে জট কাটিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে সুস্থ করে তোলেন। আর তখন থেকেই সাধুর প্রতি মন মজেছে তার। কিন্তু ধর্মীয় পরিবেশ ঠিক রাখতে এবং ভক্তবৃন্দদের কৌতূহল কাটাতে তারা মালাচন্দন এবং কণ্ঠিবদল করেন।
এরপরে চলে আসে শান্তিপুর হরিপুর অঞ্চলে ঘোষ মার্কেটের পাশে একটি নবনির্মিত গোবিন্দ মন্দিরের সেবাইত হিসেবে। যদিও সে মন্দিরের সংস্কারের কাজ এখনও চলছে। সাধু বনমালী গোস্বামীর আসল নাম বিশ্বনাথ সরকার। তিনি জানাচ্ছেন, \”চোখের সামনে স্বামীর অত্যাচারে একটি প্রাণ শেষ হতে বসেছিল আমি বাঁচিয়েছি মাত্র। অন্যদিকে আমার স্ত্রী একমাত্র ছেলের ১৪ মাস বয়সে গত হয় তখন থেকেই বৃন্দাবনসহ বিভিন্ন মন্দিরে সাধনা করি। কিন্তু কাকলী মাতাজির জীবন মরণ সমস্যায় তাকে বাঁচাতে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। তবে ওর স্বামীর সঙ্গে আইন গত ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার পরে।\”
এ প্রসঙ্গে স্বামী খোকন দেবনাথ জানাচ্ছেন, \”একদিন বাজারে যাওয়ার নাম করে তার স্ত্রী বৃন্দাবন চলে গিয়েছিল, সেই থেকে অশান্তি। আসলে এর পেছনে ছিল পরকীয়া। ডিভোর্সের পরেও দু দুবার সংসার করার চেষ্টা করেছি আজও এসেছিলাম ব্যাগে শাঁখা সিঁদুর নিয়ে। আমাদের বিবাহিত মেয়েও এসেছে মাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে, কিন্তু সাধুবাবার যে কি যাদু আছে, যে নিজের সন্তানের ডাকে সাড়া না দিয়ে তার সঙ্গেই থাকতে চায়। বরং এলাকাবাসীকে ক্ষেপিয়ে তুলে আমাদেরকেই আটকে রাখার চেষ্টা করছিল।\”
যদিও ঘটানোর পরিপ্রেক্ষিতে ওই সাধুবাবা এবং সাধিকা শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন, আইনত ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার পরেও নিয়মিত তার আশ্রয় দাতাকে মৃত্যু হুমকি, এবং দুষ্কৃতীদের নিয়ে এসে এদিন তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার কথা জানিয়ে। স্বাভাবিকভাবেই ঘটনার জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছাড়ায় ওই এলাকায়।
Mainak Debnath