নবাবের জেলা মুর্শিদাবাদের ঐতিহাসিক হাজারদুয়ারি প্যালেসের মধ্যে মিউজিয়াম প্রবেশ করতে আগে টাকা লাগত। টিকিট মুল্য ধার্য করা হত। কিন্তু হাজারদুয়ারি চত্বর ও সামনে মাঠে প্রবেশ ছিল অবাধ। অনলাইন টিকিট ২০টাকা ও অফ লাইন কাউন্টার টিকিট ২৫টাকা তবে এবার হাজারদুয়ারি চত্বরে মাঠে প্রবেশ করতে কাটতে হবে টিকিট। নয়া নিয়ম চালু হতেই ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ী গাইড সকলেই। অনেকই প্রার্থনা করার জন্য ইমামবাড়ার সামনে আসে তাদের পক্ষে টিকিট কাটা সম্ভব নয়। আর এই নয়া নিয়ম চালু হতেই খুদ্ধ এলাকার বাসিন্দারা ।
advertisement
আরও পড়ুন - বুধবার বাইক অ্যাক্সিডেন্টে মৃত্যুর পর ফের বৃহস্পতিবারেও পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু
তবে হাজারদুয়ারি কর্তৃপক্ষ নাকি দাবি করেছেন, ভিতরে বেশ কিছু অসাধু ব্যক্তি আড্ডাবাজি করত এবং নেশার সামগ্রী ব্যবহার করত। তবে হাজারদুয়ারির সামনে বিভিন্ন খাবারের দোকান বসত এই দোকান বসলে কি ভাবে ব্যবসা করবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। গোটা দেশ সহ বিদেশেরী পর্যটনের জন্য আসেন নবাব নগরী হাজারদুয়ারিতে। সামনেই শীতের মরশুম ।
আরও পড়ুন - অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কতজন নাগরিক মৃত, মলদ্বীপের ঘটনায় উদ্বিগ্ন ভারত
আর শীতের মরশুমে পর্যটন কেন্দ্র জমজমাট হবে হাজারদুয়ারি। তবে এই সিদ্ধান্তের ফলে খুদ্ধ পর্যটক থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই। মুর্শিদাবাদে দর্শনীয় স্থানগুলির তালিকায় মধ্যে পর্যটকরা সবার আগে রাখেন হাজারদুয়ারি প্রাসাদকে। এই দুর্গপ্রাসাদ যেখানে অবস্থিত, সেই পুরো চত্বরটাকে বলে নিজামত কিলা বা কিলা নিজামত। হাজারদুয়ারি ছাড়াও ইমামবাড়া, ঘড়ি ঘর, মদিনা মসজিদ, চক মসজিদের মতো বেশ কিছু স্থাপত্য রয়েছে কিলা নিজামত এলাকায়।
নবাব নাজিম হুমায়ুন জা তৈরি করিয়েছিলেন হাজারদুয়ারি। ১৮২৯ সালে তিনি এই প্রাসাদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। গোটা স্থাপত্যের রূপকার ছিলেন ডানকান ম্যাকলিওড। দেখলেই বোঝা যায়, এই প্রাসাদের স্থাপত্যশৈলী ইউরোপীয় ঘরানার, বিশেষ করে ইতালীয় রীতির সৌধগুলোর সঙ্গে মিল প্রচুর। ১৮৩৭ সালে মুর্শিদাবাদের প্রধান আকর্ষণ হাজারদুয়ারির নির্মাণকার্য শেষ হয়। ৪১ একর জায়গা নিয়ে এই প্রাসাদ দাঁড়িয়ে আছে। ১ হাজারটা দরজা আছে বলে এর নাম হাজারদুয়ারি। অবশ্য দরজাগুলির মধ্যে ১০০টাই নকল। তবে চট করে দেখে নকল দরজাগুলোকে চিহ্নিত করা বেশ মুশকিল। দেওয়ালের মধ্যে এমনভাবে ডিজাইন করা, বাইরে থেকে দেখলে হুবহু আসল দরজা মনে হবে। দুর্গপ্রাসাদে যদি হঠাৎ করে শত্রুরা আক্রমণ করে বসে, তাদের বিভ্রান্ত করার জন্যই নকল দরজাগুলো বানানো হয়েছিল। সাধারণভাবে প্রাসাদটি হাজারদুয়ারি নামে প্রচলিত হলেও, হুমায়ুন একে ‘বড়ো কুঠি’ নামেই ডাকতেন।
Kaushik Adhikary