বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মুর্শিদাবাদ জেলার রাধাবল্লভ জিউর মন্দির সহ বিভিন্ন মন্দিরে পুজো দিয়ে আয়োজন করা হল নবান্ন উৎসবের । নবান্নের তাৎপর্য 'নবান্ন' শব্দের অর্থ হল 'নতুন অন্ন'। গ্রাম বাংলায় হেমন্ত ঋতুতে যখন পাকা ধানের সোনালী আভা মাঠের চতুর্দিক মুখরিত করে তোলে, ঠিক সেই সময় নতুন আমন ধানে গোলা ভর্তি হয় কৃষকের। প্রতিটি বাড়ির আঙিনা ভরে ওঠে নতুন চালের গন্ধে। প্রধানত, নতুন ধান কাটা আর নতুন ধানের অন্ন রান্না এবং পরিবেশনকে কেন্দ্র করে পালিত হয় এই উৎসব।
advertisement
আরও পড়ুনঃ আগ্নেয়াস্ত্রসহ এক যুবককে গ্রেফতার করল সাগরপাড়া থানার পুলিশ
নবান্ন অনুষ্ঠানে নতুন অন্ন পিতৃপুরুষ, দেবতা এবং বিভিন্ন প্রাণীকে উৎসর্গ করে অতপর আত্মীয়-স্বজনকে সেই খাবার পরিবেশন করা হয়। কখনো কখনো এই অনুষ্ঠানে বাড়ির জামাই ও মেয়েকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়। অগ্রহায়ণ মাসে অনুষ্ঠিত কৃষিজ ফসল কাটার এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন লৌকিক প্রথা দেখতে পাওয়া যায়। সৃষ্টি হয় এক নতুন আবহের। নতুন ধান কেটে ঘরে ওঠানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পরে সমস্ত কৃষক পরিবারের লোকেরা। নতুন ধান কাটার পর গ্রাম বাংলার প্রচলিত গানে ঢেঁকির তালে সেই ধান ভাঙ্গা হয়। তারপর সেই নতুন চালের গুঁড়ো সাথে বিভিন্ন রকম শীতকালীন ফল, দুধ,নতুন গুড় এবং সামান্য পরিমাণ আদা মিশিয়ে তৈরি করা হয় এক রকম নৈবেদ্য।
আরও পড়ুনঃ সামশেরগঞ্জে কাঠের দোকানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড! ঘটনাস্থলে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন
যা প্রথমে গৃহে অধিষ্ঠিত লক্ষী নারায়নের সামনে ভোগ হিসাবে নিবেদন করা হয় এবং পরবর্তীতে সেই নৈবেদ্য 'কাকের' সামনে দেওয়া হয়। যা কাকের মধ্যে দিয়ে পৌঁছে যায় পূর্ব পুরুষদের কাছে। পাশাপাশি বাড়ির কুলদেবতা ও ঠাকুর ঘরের সামনে দেওয়া হয়। দুপুরে নতুন চালের সব্জির অন্নপ্রসাদ খাওয়া হয় । পরিবারের সকলে মিলেই এই নবান্ন উৎসব পালন করা হয়ে থাকে। আর বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বনের মতো নবান্ন উৎসবে মেতে ওঠেন গ্রাম বাংলার মানুষজন।
Koushik Adhikary