গোটা একটি চককে সেফটিপিন দিয়ে খোদাই করে তিনি এই মূর্তি করেছেন। দেবী সরস্বতী সাদা পদ্মের ওপর দাঁড়িয়ে বীণা হাতে অভয় দান করছেন। তার চারপাশে চক দিয়েই তৈরি করা হয়েছে চালচিত্র। এর দুই পাশে দুটি চক কেটে পেন্সিল ও ঝর্ণা কলম বানিয়েছেন। দুপাশে রাখা দোয়াতে রয়েছে অতীতে কলমরূপে ব্যবহৃত ময়ূরপুচ্ছ ও পালক—সবটাই চকে। সরস্বতীর পায়ের নীচে দুটি চকে তিনি পাঁচটি করে দুটি সারিতে থাকা মোট দশটি রাজহাঁস বানিয়েছেন। একেবারে নীচে রয়েছে এক বিশেষ ইতিহাস।
advertisement
আরও পড়ুন- নিম্নমানের রাস্তা তৈরির জেরে রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিলেন বিধায়ক
মুর্শিদাবাদের প্রান্তীয় এলাকায় সংখ্যালঘুপ্রধান গ্রাম সাহাজাদপুরের একটি প্রাথমিক স্কুলকে তিনি শান্তিনিকেতনে পরিণত করেছেন। খুব অল্প সময়েই তিনি সেখানে শিক্ষকতা করেছেন।সেখানে তিনি শান্তিনিকেতনের মতোই ছাতিমতলা সহ বেদী প্রতিষ্ঠা করেন। আজ তিনি সেই স্কুলে না থাকলেও রয়ে গিয়েছে সেই শান্তিজ্ঞানবেদীতে লেখা বাণী— ‘এই বিদ্যালয় আমাদের প্রাণের আরাম, মনের আনন্দ,আত্মার শান্তি, মাতৃসমা শান্তিনিকেতন’। এখানে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের বিদ্যাবিষয়ক বাণীসহ স্কুলসম্পর্কিত জিনিস সংরক্ষিত হয়ে আছে।
আরও পড়ুন- দুর্গাপুজোর মতো এখন সরস্বতী পুজোতেও থিমের বাহার, বাঁশের ঝুড়ি দিয়ে অভিনব ভাবনায় সাজছে এই মণ্ডপ
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতপূর্ব গবেষক, ছাত্রজীবন থেকেই মুর্শিদাবাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতি নিয়ে তিনি কাজ করেছেন। তাঁর অন্যান্য শিল্পকীর্তির মধ্যে রয়েছে সাবানের বঙ্গবন্ধু সহ নেতাজী, জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রা, মোমের মদিনা ও কালী, পাতার রবীন্দ্রনাথ। তিনি বলেছেন ‘আমার পুরাতন বিদ্যালয়ের প্রতীক ও পতাকায় যে ছবিগুলি এঁকেছিলাম সেগুলি চকের সরস্বতী মূর্তিতে চক কেটে তৈরি করেছি। খোলা বই,বাংলা-হিন্দি-আরবি- ইংরেজির প্রথম অক্ষর। প্রাথমিক বিদ্যালয়টিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুনিয়াদরূপে গড়তে চেয়েছিলাম’ ।
কৌশিক অধিকারী