উদ্ধার হয়েছে ছটি ব্যাগ। সেখান থেকে একটি হার্ডডিস্ক, পেনড্রাইভ ও একাধিক নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতির কান্ডে ৩৫০০ বেশির নামের তালিকা উঠে এসেছে সিবিআই হাতে। ছবি সহ অ্যাডমিট কার্ডের জেরক্স ও শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণের নকল কপি উদ্ধার করা হয়েছে ব্যাগ থেকে।
আরও দেখুন
advertisement
মোট ৬টি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি কাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছে এবং কত টাকা নেওয়া হয়েছে তার ও তথ্যগত প্রমাণ উঠে এসেছে। অন্যদিকে, একটি হার্ডডিস্ক ও পেন ড্রাইভ উদ্ধার করেছে সিবিআই। মোট ২৫জনের তদন্তকারী দল এই দীর্ঘ প্রায় ৪০ ঘন্টার বেশি সময় ধরে ম্যারাথন জেরা করছেন। যদিও এখনও পর্যন্ত পুকুরে জল ছেঁচে ফেলার কাজ চলছে। এই জল ছেঁচার কাজ সম্পন্ন করে মোবাইলের খোঁজে তল্লাশি করবে সিবিআই বলে সুত্রের খবর।
কিন্তু কে এই জীবন কৃষ্ণ সাহা। জানা যায়, জীবন কৃষ্ণ সাহা পেশায় একজন শিক্ষক। বাবা বিশ্বনাথ সাহা, স্ত্রী টগর সাহা। প্রথমে ২০০৪ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা দিয়ে শুরু হয় তাঁর পথচলা। যদিও ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান। বাবার বিশ্বনাথ সাহার বীরভূম জেলার সাঁইথিয়াতে তেল মিল ও আলুর কোল ষ্টোরেজ আছে।
আরও দেখুন
অন্যদিকে বড়ঞাতে রেশনের চালের ডিস্ট্রিবিউটার তাঁর বাবা বিশ্বনাথ সাহা। বর্তমানে পৈতৃক ব্যবসা দেখাশুনো করতেন তিনি। যদিও ২০১৩ সালে প্রাথমিক শিক্ষকতা ত্যাগ করে বীরভূম জেলার নানুরের দেবগ্রাম হাইস্কুলের শিক্ষকতা করেন। পরে ট্রান্সফার নিয়ে কুন্ডল হাইস্কুলে যোগদান করছিলেন ২০২১ সালে, যদিও বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পরেই স্কুলে ছুটি নেন তিনি।
জানা যায়, কলেজ জীবন থেকেই তৃণমূল করেন। যদিও বীরভূম জেলার ছত্রছায়া নিয়েই তৃণমূল করে আসছেন জীবন। অনুব্রত মন্ডলের অনুগত হিসেবেই পরিচিত জীবন কৃষ্ণ সাহা । ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী অমিয় দাসকে ২৭৫৩ ভোটে পরাজিত করে জয়ী হয় তৃণমূলের জীবন কৃষ্ণ সাহা।
রঘুনাথগঞ্জের বাসিন্দা স্ত্রী টগর সাহা কে বিয়ে করে ২০১৩ সালে। বিয়ের পরেই জীবন কৃষ্ণ সাহার সহযোগিতায় ২০১৪ টেটে প্রাথমিক চাকরি পান ২০১৭ সালে। বাড়ির কাছেই একশো মিটারের মধ্যে আন্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন স্ত্রী, প্রভাব খাটিয়ে বাড়ির কাছেই শিক্ষকতা করেন তিনি। অন্যদিকে শ্যালক নিতাই সাহা প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
সূত্রের দাবি, জীবনের আয় বহির্ভূত সম্পত্তির হদিশ পেয়েছেন তাঁরা। মিলেছে একাধিক এজেন্টের নাম, মোবাইল নম্বর সহ একাধিক তথ্যও। তাঁদের সঙ্গে জীবনের কীভাবে তথ্য ও টাকা পয়সা দেওয়া নেওয়া হত, আদৌ তা হত কি না সেই সংক্রান্ত তথ্যও জীবনকে জিজ্ঞাসাবাদে মিলেছে বলে দাবি সিবিআইয়ের। তবে প্রাথমিক অবস্থায় সিবিআই আধিকারিকদের সামনে নিজেকে স্মার্ট দেখানোর চেষ্টা করেন জীবন। কিন্তু ক্রমাগত সিবিআই আধিকারিকদের জেরার মুখে এক সময় ভেঙে পড়েন বিধায়ক।
তবে যে নির্দিষ্ট প্রশ্ন ও তথ্যের খোঁজে সিবিআই আধিকারিকরা জীবনের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে এসেছিলেন সে সবের অনেক কিছুর খোঁজ পাওয়া যায়নি। এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলেনি বিধায়কের কাছ থেকে। তাই নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছেন কেন্দ্রের গোয়েন্দারা।
Kaushik Adhikary