ওই ছাত্রর বাবা নির্মল ঘোষের অভিযোগ, গত কয়েকদিন আগে সৈদাবাদের একটি চায়ের দোকানে গন্ডগোল হয়েছিল। সেই গন্ডগোলে পুলিশ খুঁজে বেড়াচ্ছিল অভিযুক্তদের। শনিবার বেলা ১২ নাগাদ তাঁর ছেলে অতনু এক বন্ধুর সঙ্গে বহরমপুরের মণীন্দ্রচন্দ্র বিদ্যাপীঠের মাঠে খেলাধুলা করছিল। সেই সময় সৈদাবাদ ফাঁড়ির পুলিশ অতনুকে ধরে৷ পুলিশের হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে পাশের ভাগীরথী নদীতে ঝাঁপ দেয় অতনু। তাঁর পরিকল্পনা ছিল, নদী সাঁতরে পার হয়ে উল্টো দিকে উঠে পালাবে সে৷
advertisement
নির্মলবাবু বলেন, তিনি বিকেলে বাড়ি পোঁছে দেখেন তাঁর ছেলে বাড়িতে নেই। ছেলের মোবাইল ফোনও সুইচ অফ ছিল। এর পরই অতনুকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে তার পরিবারের সদস্যরা৷ অতনুর কোনও খোঁজ না পেয়ে সৈদাবাদ ফাঁড়িতে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। কিন্তু পুলিশ কোন সহযোগিতা করেনি বলে ওই ছাত্রের বাবার অভিযোগ। শেষে রবিবার রাতে ভাগীরথী নদীর রাধারঘাট এলাকায় অতনুর মৃতদেহ ভেসে ওঠে।
ছেলের মৃত্যুর জন্য পুলিশের অমানবিক আচরণকেই দায়ী করেছেন নির্মলবাবু৷ তাঁর প্রশ্ন, ছেলের নামে কোনও অভিযোগ থাকলে পুলিশ কেন অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট নিয়ে গিয়ে অতনুকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করল না৷ এমন কি, অতনু নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পরও সৈদাবাদ ফাঁড়ির পুলিশ তাঁদের কোনও খবরই দেননি বলে অভিযোগ মৃত ছাত্রের বাবার৷ তিনি বলেন, অতনু সাঁতার জানত৷ ভেবেছিল হয়তো নদী পেরিয়ে পালাবে৷ কিন্তু বর্ষার সময় এখন নদীতে জল বেশি৷ পুলিশ চাইলেই নৌকা নিয়ে আমার ছেলেকে উদ্ধার করতে পারত৷ কারণ দু পারেই ঘাটের কাছে নৌকা থাকে৷
আরও পড়ুন: আজই কি সাংসদ পদ ফিরে পাবেন রাহুল? দেরি হলে আদালতে যাবে কংগ্রেস, তৈরি বিরোধীরাও
এই ঘটনায় সৈদাবাদ ফাঁড়ির যে পুলিশকর্মীরা জড়িত, যথাযথ তদন্ত করে তাঁদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নির্মলবাবু৷ কয়েকদিন আগেই মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার ভিতরে চোর সন্দেহে ধৃত এক ব্যক্তির রহস্যমৃত্যু হয়৷ মৃতের পরিবার অভিযোগ করে, ওই ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন করেছে পুিলশই৷ এমন কি, থানায় ধরে নিয়ে যাওয়ার পর দু দিন কেটে গেলেও ওই ব্যক্তিকে আদালতে পেশ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল৷ নবগ্রামের ঘটনার পর বহরমপুরের কলেজ ছাত্রের মৃত্যুতেও কাঠগড়ায় সেই পুলিশই৷
নির্মল ঘোষ নামে ওই ব্যবসায়ী বলেন, তার ছেলে দোষী হলে পুলিশ তার বাড়িতে যেতে পারত, তাকে জানাতে পারতো ।কিন্তু তা না করে হঠাৎ করে পুলিশ অতনুকে ধরতে যাওয়াই বাধ্য হয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিল অতনু ।সাঁতার জানলেও বর্ষার ভরা নদী থেকে আর উঠতে পারেনি তার ছেলে। ওই ঘটনার বিচার চান তিনি। এদিকে পুলিশ জানিয়েছে , অতনুকে ধরা হয়নি, পুলিশের জিপ দেখে ভয়ে অতনু নদীতে ঝাঁপ মেরেছে। সেই ইনফরমেশন পুলিশের কাছে ছিল না। তা না হলে পুলিশ ওই ছাত্রকে অবশ্যই উদ্ধারের চেষ্টা করত।