নতুন নতুন খাবারের বিপদের সঙ্গে যোগ হয় আলস্য। শীতের মরশুমে শারীরিক পরিশ্রম অনেকাংশে কমে যায়। মনই যে চায় না একটু দৌড়াদৌড়ি করতে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে অনেকেই তাই আশ্রয় নেন ঘরের মধ্যেই। তাই শীতকালে শরীরের ওজনের দিকে নজর রাখা অত্যন্ত জরুরি। আর সে ক্ষেত্রে খাদ্যই হতে পারে একমাত্র ত্রাণকর্তা।
বাস্তবে কিন্তু, নতুন গুড় আর পিঠে-পুলির সঙ্গে শীতকাল নানা রকমের সবজিতে ভরপুর একটা সময়ও এনে দেয় জীবনে। খাদ্যের এই প্রাচুর্য শীতকালকে বিশেষ করে তোলে।
advertisement
এখানে কয়েকটি শীত কালের শাকসবজি এবং খাদ্য উপাদান উল্লেখ করা রইল যা ওজন নিয়ন্ত্রণে খুবই উপকারী।
আরও পড়ুন: 'রাজনীতি আমার পেশা নয়, রাজনীতি আমার প্যাশন!' মেঘালয়ের মঞ্চ থেকে হুঙ্কার মমতার
গাজর
যদিও গাজর শব্দটা পড়া মাত্র গাজরের হালুয়ার কথা মনে হতেই পারে। কিন্তু যেটা মনে রাখা উচিত, তা হল গাজর একটি ফাইবারযুক্ত সবজি। আর ফাইবার থাকার কারণে এটা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। গাজরে স্বাভাবিকভাবেই ক্যালোরি অনেক কম থাকে, যা ওজন কমাতে ইচ্ছুকদের জন্য এটিকে একটি চমৎকার খাবার করে তোলে।
ফাইবারের সঙ্গে সঙ্গে গাজরে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন কে যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যায়। যেটা শরীরে জরুরি পুষ্টি প্রদান করে।
মুলো
আপাতদৃষ্টিতে মুলোতে পুষ্টিমূল্য তেমন দেখতে পাওয়া যায় না। আর সেটাই শাপে বর হয়ে দেখা দেয়। মুলোতে জলের উপাদান অনেক থাকে এবং ফাইবারও থাকে প্রচুর পরিমাণে, তাই এটা ওজন কমানোর একটি নিখুঁত সবজি হতে পারে। গাজরের মতো মুলোতেও ফ্যাট ও ক্যালোরি কম থাকে। ফলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকলেও তা ক্যালোরি বেশি গ্রহণ করতে দেয় না।
শীতের মরশুমে মুলো বিভিন্ন ভাবে রান্না করা যায়। মুলোর পরোটা থেকে সাধারণ মুলো ও টম্যাটোর তরকারি- যে ভাবেই হোক, শীতকালে অবশ্যই যতটা সম্ভব মুলো খাওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: ছোলার ডাল তো ভালবাসেন, কিন্তু কয়েকটা বিষয় মাথায় না রাখলে কিন্তু মহাবিপদ!
সবুজ শাক
বাস্তবে শীতকাল শাকের সমার্থক। শীত মরশুমে প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি পাওয়া যায়। এই সবুজ পাতাগুলি পুষ্টিতে পরিপূর্ণ এবং শুধুমাত্র ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে, তাই নয়, এগুলো শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং খনিজগুলির ঘাটতিও পূরণ করতে পারে।
শাককে সাদামাটা না রেখে মাখন এবং ঘি দিয়ে প্রস্তুত করা যেতে পারে। তবে ভাত বা রুটির সঙ্গে খাওয়ার সময়, মনে রাখতে হবে ভাত যেন একটু কমই নেওয়া হয়। তবে স্যুপে দিয়েও শাক খাওয়া যেতে পারে।
চিনাবাদাম
শীতের মরশুমে চিনাবাদাম হতে পারে নিয়মিত খাবারের একটা। এক মুঠো চিনাবাদাম দীর্ঘ সময়ের জন্য পেটকে ভরাট করে রাখতে পারে। ফলে তাড়াতাড়ি খিদে পাবে না। ফ্যাট বা চর্বি সমৃদ্ধ হলেও পরিমিতভাবে খেলে চিনাবাদাম ওজন কমানোর জন্য চমৎকার খাবার হতে পারে।
ভারতে, বিশেষ করে উত্তর ভারতে, শীতকালে গুড় এবং তিলের বীজ ব্যবহার করে চিনাবাদামের বেশ কিছু সুস্বাদু খাবার তৈরি করা হয়। এই মরশুমি খাবারগুলিকে কখনই হেলায় হারানো উচিত নয়।
মিষ্টি আলু
এক বাটি ভাজা মিষ্টি আলু কয়েক ঘন্টার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার দিতে পারে। ফাইবার সমৃদ্ধ এই খাবারগুলো ওজন কমানোর জন্য ভাল। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মিষ্টি আলুর ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডায়াবেটিস রোগীদের মিষ্টি আলু খাওয়ার পরামর্শ দেন। এগুলি রান্না করা সহজ তো বটেই, সাধারণ আলুর চেয়ে অনেক আলাদা এবং ভাল স্বাদও দেয়।
বিট
বিটে চর্বি ও ক্যালোরি কম থাকে। এতে জলের পরিমাণও বেশি থাকে। এর শরীর থেকে টক্সিক জিনিস বের করে দেওয়ার ক্ষমতা আছে। এই গুণাবলী বিটকে ওজন কমানোর জন্য একটি আদর্শ খাবার করে তোলে। এটিতে থাকা মেটে স্বাদ এবং এর অনন্য টেক্সচার, এটিকে একটি আকর্ষণীয় খাবার করে তোলে। বিট কাঁচা খাওয়া যেতে পারে বা রান্না করেও খাওয়া যেতে পারে। অনেকে একে দইতেও যোগ করে খেয়ে থাকেন।