সুতানের জঙ্গল বাঁকুড়া জেলার ঝিলিমিলি বনাঞ্চলের অন্তর্গত এলাকা হিসেবে পরিচিত। বাঁকুড়া শহর থেকে সড়কপথে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই জঙ্গলে পৌঁছান যায় সহজেই। বাঁকুড়া রেলস্টেশন বা বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রথমে রাইপুর বা রানিবাঁধের দিকে বাস বা চারচাকা গাড়িতে যেতে হয়। সেখান থেকে স্থানীয় যানবাহনে সুতান গ্রাম ও তার লাগোয়া জঙ্গল এলাকায় পৌঁছান সম্ভব। রাস্তার শেষ অংশ কিছুটা কাঁচা হলেও শীতকালে যাতায়াতে বিশেষ অসুবিধা হয় না।
advertisement
সুতানের জঙ্গলে ঘুরে দেখার মূল আকর্ষণ হল বিস্তীর্ণ শালবন, নির্জন বনপথ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ। সকালে বা বিকেলের দিকে জঙ্গলের ভেতর হাঁটলে পাখির ডাক ও পাতার মচমচে শব্দে এক আলাদা অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়।
জঙ্গলের বিভিন্ন অংশ থেকে দেখা যায় দূরের পাহাড় ও টিলার দৃশ্য। শীতের সময় বুনো ফুল, লতাগুল্ম ও শুকনো পাতার সঙ্গে রোদের খেলায় ছবি তোলার আদর্শ পরিবেশ তৈরি হয়। অনেক পর্যটকই এখানে স্বল্প দূরত্বের ট্রেকিং বা প্রকৃতি পর্যবেক্ষণে আসেন।
থাকার জন্য সুতানের জঙ্গলের একেবারে কাছে বড় হোটেল না থাকলেও আশপাশের ঝিলিমিলি, রাইপুর বা রানিবাঁধ এলাকায় সরকারি পর্যটন আবাস, বনবাংলো ও বেসরকারি লজের ব্যবস্থা রয়েছে। আগেভাগে বুকিং করলে শীতের মরশুমে থাকার সমস্যা হয় না। স্থানীয় আদিবাসী গ্রামগুলিতে কিছু হোমস্টেও চালু হয়েছে, যেখানে গ্রামীণ পরিবেশে থাকা ও দেশি খাবারের স্বাদ নেওয়ার সুযোগ মেলে। শীতের শুরুতে পাতা ঝরার এই সময় সুতানের জঙ্গল তার সবচেয়ে সুন্দর রূপে ধরা দেয়। নিরিবিলি বনভূমি, প্রাকৃতিক নীরবতা ও সহজ যাতায়াতের সুবিধা মিলিয়ে সুতানের জঙ্গল এখন বাঁকুড়া জেলার এক শান্ত, আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।





