অনেকেই হয় তো বলবেন- চেহারা! এটা ঠিক যে সুদর্শন মানুষেরা ভিড়ের মাঝে আলাদা করে চোখে পড়ে থাকেন। তবে চেহারা আদতে ঈশ্বরের দান, সেখানে আমাদের হাত নেই। হ্যাঁ, ঘষে-মেজে নিজেকে উজ্জ্বল করে তোলা যায়, পোশাক-আশাকেও কেড়ে নেওয়া যায় নজর। কিন্তু সে মনোযোগ আর কতক্ষণই বা স্থায়ী হয়! তাহলে শেষ পর্যন্ত মন জয় করতে গেলে হাতে কী পড়ে থাকে?
advertisement
আমাদের স্বভাব। ভাল স্বভাব আপনা থেকেই ভালোবাসা পায়। কিন্তু তার চেয়েও একটি বড় গুণ ঈশ্বর আমাদের দিয়েছেন, সবাইকেই দিয়েছেন, শুধু আমরা তা যথাযথ ভাবে প্রয়োগ করি না। সেটা হল আমাদের কথা বলার ক্ষমতা বা বাগ্মিতা। এই গুণ আয়ত্তে থাকলে কর্মক্ষেত্র থেকে ভালোবাসা- সব কিছু জয় করে নেওয়া যায় অনায়াসে।
কীভাবে তাহলে ভাল বক্তা হয়ে ওঠা যায়? দেখে নেওয়া যাক একে একে।
পরিবেশের সঙ্গে উপযুক্ত শব্দচয়ন
ভাষার মাধুর্যই এই- তা আমাদের নানা সমার্থক শব্দ দান করে। কিন্তু তার সবগুলো যে সব জায়গায় প্রয়োগ করা যায় না, এই বোধ মনের সুগভীরে গেঁথে নিতে হবে।
বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলা যায় রসিকতার ছলে, সেখানে বেছে নেওয়া যায় হালকা শব্দ। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে বা অফিসিয়াল জায়গায় তা চলবে না। অতএব, সর্বদা বলার আগে ভাবতে হবে, ভেবে-চিন্তে জায়গা অনুযায়ী সঠিক শব্দ প্রয়োগ করতে হবে।
শব্দের সঠিক উচ্চারণ
কোন শব্দ বলা হবে, সে না হয় মাথায় থাকল। কিন্তু তার সঠিক উচ্চারণ যদি জানা না থাকে? তাহলে সবটাই মাটি, উল্টে হাসির খোরাক হতে হবে। তাই একা থাকলে যে শব্দ উচ্চারণে জিভ ধাক্কা খাচ্ছে, তা বার বার বলে নিজেকে তৈরি করে নিতে হবে।
আরও পড়ুন-Interesting Facts: মেয়েদের শার্টে 'পকেট' থাকে না কেন? আসল কারণ শুনলে চমকে যাবেন গ্যারান্টি!
কোনও বই জোরে জোরে পড়লেও এক্ষেত্রে কাজ হয়। একটানা বাক্য বলা যেমন রপ্ত হবে, তেমনই নানা নতুন নতুন শব্দও জানা যাবে।
স্বরের ওঠা-পড়া
শুধু গানের ক্ষেত্রে নয়, কথা বলার সময়েও স্বরের ওঠা-পড়া একটা অভ্যাস করার মতোই ব্যাপার। যেমন- সংবেদনশীল বিষয়ে কথা বলতে গেলে সুর হবে নম্র, গলার আওয়াজ থাকবে নিচুতে, কথা বলতেও হবে যথাসম্ভব ধীরে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে গলা সামান্যই উঁচুতে উঠবে এর চেয়ে, বলার ধরন হবে গম্ভীর।
এভাবে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে গলার আওয়াজ কেমন হবে, আস্তে কথা বলা হবে না জোরে তা রপ্ত করে নিতে পারলে অন্যরা আমল দিতে বাধ্য হবেন।
শুধু বলা নয়, শোনাও
সুবক্তার অন্যতম লক্ষণ কী? না, অন্যের কথা মন দিয়ে শোনা, তার পরে নিজের বক্তব্য রাখা। এটা অন্যকে সম্মান দেওয়ারও পদ্ধতি বটে। অন্যকে সম্মান দিলে তবেই কিন্তু সম্মান ফেরত পাওয়া যায়।
অতএব, কখন কতটা কথা বলা দরকার, কতটা নয়, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। অন্যরা একমাত্র তাহলেই কথা শুনতে চাইবেন, ভালোবাসবেন, মতামতেরও জোর দেবেন।