পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ২ নম্বর ব্লকের দেউলবাড় গ্রামে প্রতিবছর ধুমধাম করে পালিত হয় ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব। প্রায় ৪০০ বছর ধরে হয়ে আসছে শ্যামচাঁদ ও অনন্ত পুরুষোত্তম জীউর রাস উৎসব। ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, পটাশপুরের পঁচেট গড়ের রাজা চৌধুরী বজেন্দ্রনন্দন দাস মহাপাত্র ওড়িশা থেকে তাঁর ধর্মগুরু মুকুন্দদেব নন্দকে নিয়ে আসেন। কিছুদিন পর মুকুন্দদেব শ্যামচাঁদ জীউর মূর্তি নিয়ে দেউলবাড়ে বসতি স্থাপন করেন এবং এখানেই প্রতিষ্ঠা করেন শ্যামচাঁদ জীউর মন্দির। সেই থেকেই শুরু হয় রাস উৎসব। প্রতিবছর কার্তিক পূর্ণিমার দিন থেকে শুরু হয় রাস উৎসব।
advertisement
এর পর দীর্ঘ সময় কেটেছে। প্রায় আড়াই শতাব্দী পর দেউলবাড়ের অতুল কৃষ্ণ নন্দগোস্বামী বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় যান এবং সেখান থেকে অনন্ত পুরুষোত্তম জীউর মূর্তি নিয়ে আসেন। প্রথমে তিনি বাড়িতেই পুজো করতেন, পরে শ্যামচাঁদ জীউর মন্দিরের পাশে সেই মূর্তি স্থাপন করেন। সেই থেকেই এই উৎসবের নাম হয় দেউলবাড় শ্যামচাঁদ অনন্ত পুরুষোত্তম জীউ রাস উৎসব।
রাস উৎসবে গোটা এলাকা পরিণত হয় এক আলোকোজ্জ্বল মেলায়। কাছাকাছি দশ থেকে বারোটি গ্রামের মানুষ একত্রিত হন এই রাস ঘিরে। আগে প্রদীপের আলোয় আলোকিত হত গ্রাম, এখন তার জায়গা নিয়েছে বিদ্যুতের ঝলমলে আলো। তবু আবেগ, ভক্তি, উচ্ছ্বাসে কোনও খামতি পড়েনি। এখনও প্রতিবছর উৎসবের সময় বসে বিশাল মেলা। স্থানীয় হস্তশিল্প, খেলনা, মিষ্টি, নাগরদোলা… সব মিলিয়ে ভরে ওঠে গ্রাম। দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসেন এই ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব দেখতে।





