পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সদর ঐতিহাসিক তাম্রলিপ্ত বা তমলুকের আজও মধ্যমণি মা বর্গভীমা। কয়েক হাজার বছর ধরে শক্তি স্বরূপিণী আদ্যাশক্তি মহামায়া রূপে দেবী বর্গভীমার আরাধনা চলে আসছে। মতান্তরে তিনি ভীমরূপা বা ভৈরব কপালী নামেও পরিচিত। অতীতের প্রায় সব কিছুই ধ্বংসের মুখে চলে গেলেও স্বমহিমায় আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে এই সুবিশাল মন্দির। ওড়িশি স্থাপত্যের আদলে এই দেউলের উচ্চতা প্রায় ৬০ ফুট। মন্দিরের দেওয়ালে টেরাকোটার অজস্র কাজ। তার মধ্যেই মন্দিরের গর্ভগৃহে কালো পাথরে তৈরি মায়ের মূর্তি বিরাজ করছে দেবী উগ্রতারা রূপে। সতীর একান্ন পীঠের এক পীঠ তমলুকের দেবী বর্গভীমা, বর্তমানেও নিষ্ঠার সঙ্গে পূজিতা হন মা। সারা বছর বিশেষ তিথিতে বিশেষ পুজোর পাশাপাশি কাত্যায়নী চতুর্দশীতে মায়ের বার্ষিক পুজোর আসর বসেছে মন্দিরে।
advertisement
আরও পড়ুন : ব্লাড সুগারে কি কমলালেবু খাওয়া যায়? নাকি এক কোয়া খেলেই হু হু করে বাড়বে ডায়াবেটিস? জানুন
এ বিষয়ে মন্দিরের সেবায়েত সমীরণ অধিকারী জানান, “কাত্যায়নী চতুর্দশীতে মায়ের বার্ষিক পুজো হয়। এদিন মায়ের বার্ষিক পুজো ও সপ্তসতী যজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে। এই যজ্ঞের অগ্নিসংযোগ হয় সূর্যের আলো থেকে। যজ্ঞে কয়েক কুইন্টাল কাঠ ও কয়েক মণ ঘি আহুতি দেওয়া হয়। সপ্তসতী যজ্ঞ হয় সপ্তশত শ্লোক পাঠের মাধ্যমে। যজ্ঞের শেষে আহুতি দিতে পারে সাধারণ মানুষ। সেই উপলক্ষে মন্দিরে ভক্তদের সমাগম হয়েছে। দিনভর চলবে যজ্ঞের অনুষ্ঠান ও বার্ষিক পুজো। ভক্তরা নিজের পরিবার, সমাজ ও বিশ্বের কল্যাণে আহুতি দিতে পারেন।”
তমলুকের শক্তিপীঠের প্রাচীন নাম বিভাস। দেবী এখানে বর্গভীমা বা ভীমারূপা নামে অধিষ্ঠিত। ভৈরব সর্বানন্দ মতান্তরে কপালি। মহামায়া সতীর দেহাংশের মধ্যে বাম গুল্ফ বা বাম পায়ের গোড়ালি পড়েছিল এখানে। দেবী ভক্তদের চারটি বর্গ দান করেন, তাই তাঁর নাম বর্গভীমা।