স্বপ্নের মতোই উত্থান নরেন্দ্র মোদির! প্রথম জীবনে দারিদ্র্যের সঙ্গে নিত্য লড়াই ছিল সঙ্গী। কিন্তু পরিস্থিতি যা-ই হোক না-কেন শরীর-স্বাস্থ্যের সঙ্গে কখনওই আপস করেননি মোদি! তাই প্রতিদিন প্রায় ১৪ ঘণ্টা ধরে কাজ করতে হয় তাঁকে। এমনকী কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেও পিছপা হন না মোদি। বয়স যে একটা সংখ্যামাত্র - এটাই যেন আরও বারবার প্রমাণ করে দেন তিনি!
advertisement
প্রধানমন্ত্রীকে যাঁরা খুব কাছ থেকে দেখেন, তাঁরা স্বীকার করেন যে, মোদির মতো কর্মঠ এবং কর্মব্যস্ত মানুষ খুব কমই দেখা যায়। শুধু তা-ই নয়, মোদির ঘনিষ্ঠ জনেরা এ-ও বলেন যে, যতই কাজের চাপ থাক না-কেন, সকালে শরীরচর্চার জন্য অন্তত ঘণ্টাখানেক সময় ঠিকই বার করে নেন প্রধানমন্ত্রী। এর পাশাপাশি নির্দিষ্ট ডায়েটও মেনে চলেন। সঙ্গে চলে যোগাভ্যাসও। আর ৭২ বছর বয়সেও প্রধানমন্ত্রীর এ-হেন ফিটনেসের রহস্য নিশ্চয়ই সকলেই জানতে চান! তাই দেখে নেওয়া যাক, নিজেকে কীভাবে ফিট রাখেন মোদি (Fitness routine)।
আরও পড়ুন : দেশের মাটিতে ফিরবে চিতা, নামিবিয়ায় ভারতের বোয়িং বিমান
যোগাসন:
ভারতের সুপ্রাচীন ঐতিহ্য যোগাসনের উপর অটুট আস্থা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। তাই ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই ধ্যানে বসেন তিনি। আসলে মনঃসংযোগের এটাই অন্যতম আদর্শ পন্থা। এর পর রুটিনে থাকে সূর্যনমস্কার এবং প্রাণায়াম। সেই সঙ্গে কিছুক্ষণ হাঁটেনও তিনি। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন যে, যোগব্যায়াম শুধুমাত্র স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, এর পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্যও বেশ উপযোগী। ২০২২ সালের আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষ্যে একটি ট্যুইটে মোদি লিখেছিলেন, “যোগ আমাদের জন্য শান্তি নিয়ে আসে। শুধুমাত্র ব্যক্তির জন্য নয়, এটি আমাদের সমাজ, জাতি এবং বিশ্বের জন্যও শান্তি আনে।”
উপবাস:
ভারতীয় সংস্কৃতিতে উপবাসের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। বিশ্বাস করা হয়, উপবাস করা হলে শরীরের ভিতরের বিষাক্ত পদার্থ বাইরে বেরিয়ে যায়। আর এই তত্ত্বে বিশ্বাস করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও। ২০১২ সালের একটি সাক্ষাৎকারে মোদি জানিয়েছিলেন যে, ৩৫ বছর ধরে তিনি নবরাত্রিতে উপবাস করছেন। এমনকী বিদেশ সফরে থাকলেও এর অন্যথা হয় না। প্রধানমন্ত্রীর মতে, শরীরকে পরিশুদ্ধ করতে এবং সুস্থ থাকার জন্য উপবাস একটি দুর্দান্ত উপায়।
ডায়েট:
প্রধানমন্ত্রীর খাওয়াদাওয়া সাধারণ মানুষের মতোই। আর এটা তিনি কঠোর ভাবেই মেনে চলেন। বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, সকালের জলখাবারে তিনি থেপলা, ধোকলা বা চিঁড়ে খেতে পছন্দ করেন। আবার মধ্যাহ্নভোজে তাঁর পাতে থাকে গুজরাতি কিংবা দক্ষিণ ভারতীয় হালকা খাবার। আর রাতে রুটি, মুসুর ডাল এবং টক দই।
পর্যাপ্ত ঘুম:
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে অভিনেতা অক্ষয় কুমারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোদি জানিয়েছিলেন, “সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরেই মেঝেতে পা রেখে কিছুক্ষণ বসে থাকি, এটা আমার অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। আমার শরীরের রোজকার চক্রটা এমন হয়ে গিয়েছে যে, ৩-৪ ঘণ্টার বেশি ঘুমোতেই পারি না। প্রতিদিন ভোর ৫টায় উঠে ৩০-৩৫ মিনিট মতো যোগব্যায়াম এবং ধ্যান করার পরেই কাজকর্ম শুরু করে দিই।”
ঘরোয়া প্রতিকারই সবচেয়ে ভাল:
যে কোনও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যায় ঘরোয়া প্রতিকার বা টোটকা অনেকটা ম্যাজিকের মতোই কাজ করে। এমনটাই বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। একাধিক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “ঠান্ডা লাগলে সাধারণত আমি ওষুধ খাই না। বরং গরম জল পান করি আর সঙ্গে করি উপবাস। ওতেই তা সেরে যায়।”