এখানে ইট কাঠ পথের পাঁজরে আজও ইতিহাস ফিসফিস কথা কয়। এখানে একবার গেলে প্রাকৃতিক মুগ্ধতার পাশাপাশি পাবেন এক আধাত্মিক শান্তি। পুজোর সময় সহ সারাবছর ভক্ত ও পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে ওই মন্দির নগরীতে।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনকাটির রায় পরিবারের ওই মন্দির নগরী।এই পরিবার রাজা বল্লাল সেনের কুল গুরুর বংশধর। পরিবার সূত্রে জানা যায় রাজার আমলে ঘন জঙ্গল কেটে এই গ্রাম তৈরি হয়েছিল। তাই এই গ্রামের নামকরণ হয়েছে বনকাটি। জানা যায় রাজা বল্লাল সেন বাংলাদেশ থেকে এসে তাঁর দীক্ষাগুরু তান্ত্রিক আচার্য মহেশ্বর প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে কাঁকসার গড়জঙ্গলে রাজ্যপাট শুরু করেছিলেন।
advertisement
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন”
অজয় নদীর মাধ্যমে ব্যবসা বানিজ্যের সুবিধার্থে বনকাটি গ্রাম পর্যন্ত চ্যানেল খাল তৈরি করেন। বনকাটি এলাকা থেকে লাক্ষা, কাঠ, কয়লা কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হত। এবং সেখান থেকে মশলাপাতি নিয়ে আসা হত। এক কথায় বনকাটি ছিল রাজা বল্লাল সেনের বানিজ্যিক কেন্দ্র।
পানাগড়- মোরগ্রাম রাজ্য সড়কের ১১ মাইল মোড় থেকে পশ্চিম দিকে অজয় নদী লাগোয়া এই বনকাটি গ্রাম। পরবর্তীকালে মহেশ্বর প্রসাদের বংশধর রায়বাহাদুর খেতাব পায়। আর তারপর থেকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলে রায় পদবি হয় আচার্যের বংশধরদের।আর রায় পরিবারের পুর্ব পুরুষরা যাতে জল পায়, তার জন্য তাদের নামে এই পাঁচটি শিব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মহেশ্বর প্রসাদের এক বংশধর লক্ষ্মীকান্ত রায়।টেরাকোটার কাজ করা ওই মন্দিরগুলি বহু ইতিহাসের সাক্ষী বহন করে চলেছে।
কত ইতিহাস হয়ত আজও অজানা থেকে গিয়েছে। দুর্গাপুরের এক বিশিষ্ট প্রত্নতত্ত্ববিদ প্রণব ভট্টাচার্য জানান, কাঁকসার গড় জঙ্গল সহ ওই এলাকায় রাজা বল্লাল সেন ও লক্ষ্মণ সেনেরও পুর্বপুরুষদের গড় ছিল।রাজা বিজয় সেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন। তার প্রমাণ মিলেছে। তাই ওই এলাকা “সেন পাহাড়ি পরগনা ” নামে পরিচিত ছিল এক সময়। এখনও আবগারি দফতরের খাতায় ওই এলাকাটি “সেন পাহাড়ি পরগনা” নামেই উল্লিখিত হয়।
দীপিকা সরকার