এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি সিকিমে একাধিক নতুন জেলা তৈরি করা হয়েছে। সেই তালিকায় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাম সোরেং জেলা। ২০২১ সালের ২১শে ডিসেম্বর সরকারিভাবে এই জেলার জন্ম — তবে এই জন্ম শুধু প্রশাসনিক মানচিত্রে নয়, সোরেং ধীরে ধীরে হয়ে উঠছে নতুন পর্যটন স্বপ্নের এক উর্বর মাটি।
আরও পড়ুনঃ আইআইটি-আইআইএমের স্নাতক, কোটি টাকার প্যাকেজ ছেড়ে নিরাপত্তারক্ষীর চাকরি শুরু! তিনি কে জানেন?
advertisement
সোরেং-কে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই বড় ঘোষণা এসেছে ভারত সরকারের দিক থেকেও। Aspiration Districts তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে সোরেং — যার মূল লক্ষ্যই হল পিছিয়ে থাকা জেলার সার্বিক উন্নয়ন। আর এই স্বীকৃতি পেয়ে নতুন উদ্যমে মাঠে নেমেছে সেখানকার মানুষ।
সোরেং-এর স্থানীয় বিধায়ক আদিত্য গলে-র নেতৃত্বে চলছে নানা উদ্যোগ। গ্রামীণ পর্যটনকে হাতিয়ার করে কীভাবে এই জেলাকে আন্তর্জাতিক পর্যটন মানচিত্রে জায়গা করে দেওয়া যায়, সেই স্বপ্ন নিয়ে চলছে একের পর এক পরিকল্পনা।
দিন দিন সোরেং জেলায় গড়ে উঠছে নতুন নতুন হোমস্টে। স্থানীয়রা নিজেদের বাড়িকে অতিথি আবাসে রূপান্তর করে পর্যটকদের আতিথেয়তা দিচ্ছেন পাহাড়ি সৌন্দর্যের ছোঁয়ায়। এর সঙ্গে হাত ধরেই স্থানীয় কৃষি উৎপাদন, হ্যান্ডলুম আর হ্যান্ডিক্রাফট পণ্যকে ব্র্যান্ডিং ও বাজারজাত করার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। তরুণ প্রজন্মও এগিয়ে আসছে এই নতুন দিশার সাথে।
এই স্বপ্নযাত্রারই এক বড় পদক্ষেপ হিসেবে সদ্য সমাপ্ত Travel & Tourism Fair (TTF) — যা কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয় এবং ভারতের অন্যতম বৃহত্তম পর্যটন মেলা বলে ধরা হয় — সেখানে অংশ নিয়েছে সোরেং জেলা। রাজ্যের প্রতিনিধি দল সেখান থেকে তুলে ধরেছেন সোরেং-এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সংস্কৃতি আর নতুন পর্যটন সম্ভাবনার গল্প।
সোরেং জেলার এই নতুন অধ্যায়কে স্বাগত জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন দপ্তরের ইকো-ট্যুরিজম চেয়ারম্যান এবং সিকিম রাজ্য পর্যটনের উপদেষ্টা রাজ বসু। তাঁর মতে, “এই ধরনের স্থানীয় উদ্যোগই উত্তর-পূর্ব ভারতের টেকসই পর্যটনের ভবিষ্যৎ। সোরেং-এর মডেল অনুপ্রেরণা হতে পারে অন্য জেলাগুলোর জন্যও।”
পর্যটন মানেই আর শুধু পাহাড় দেখা নয় — পাহাড়ের কোলে লুকিয়ে থাকা গ্রামীণ সংস্কৃতি, হস্তশিল্প, কৃষিপণ্য আর স্থানীয় আতিথেয়তাকে গ্লোবাল প্ল্যাটফর্মে তুলে ধরা। সোরেং জেলা সেই দিকেই হাঁটছে — কাঞ্চনজঙ্ঘার ছায়ায় গড়ে উঠছে নতুন স্বপ্ন, নতুন দিগন্ত।
ঋত্বিক ভট্টাচার্য