বর্তমান সময়ে শহর ও গ্রামাঞ্চলে খাদ্যাভ্যাসে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। অনেক পুষ্টিকর দেশীয় শাকসবজি ও ফসল, যেমন খাম আলু, সজনেপাতা, নটেশাক, বিভিন্ন জাতের কচু, পুঁই শাক কিংবা ঝিঙে। এগুলি ধীরে ধীরে মানুষের রোজকার খাদ্যতালিকা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এর অন্যতম কারণ হল বাজারমুখী কৃষি উৎপাদন, আধুনিক খাদ্যসংস্কৃতির প্রতি আকর্ষণ এবং ঐতিহ্যবাহী খাবারের প্রতি উদাসীনতা। এই পরিপ্রেক্ষিতে হিঙ্গলগঞ্জের এই রান্না প্রতিযোগিতা ছিল এক সচেতনতামূলক পদক্ষেপ, যেখানে সুন্দরবনের নারীরা হাতে-কলমে দেখালেন কীভাবে এ সকল ফসলকে ব্যবহার করে সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর খাবার প্রস্তুত করা যায়।
advertisement
সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত গৃহিণী ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যারা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। তারা নিজ নিজ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী ও সৃজনশীল রেসিপি নিয়ে হাজির হন। কেউ তৈরি করেন সজনেপাতার পুঁই-চচ্চড়ি, কেউ খাম আলুর ঝোল, কেউবা আবার নটেশাক দিয়ে পিঠে বা বড়া। অনেকেই কচুশাক দিয়ে মাছের ঝোল বা নিরামিষ তরকারি তৈরি করেন, যা একদিকে পুষ্টিকর এবং অন্যদিকে রুচিকর। এছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা প্রতিটি পদ পরিবেশনের সময় তার পুষ্টিগুণ, ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং রান্নার প্রণালী ব্যাখ্যা করেন, যা দর্শকদের কাছে এক শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে। এই প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য ছিল সমাজে হারিয়ে যেতে বসা দেশীয় খাদ্য ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেশীয় ফসল ও শাকসবজির পুষ্টিমান সম্পর্কে সচেতন করা।