এই বিষয়ে গ্রেটার নয়ডার ফোর্টিস হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের পরামর্শক ও চিকিৎসক প্রশান্ত আগরওয়াল জানান, হার্ট অ্যাটাকে হার্টে রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালীতে জমাট বাঁধে এবং স্ট্রোকের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এর কারণে মস্তিষ্কের কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অনেকের মৃত্যু হয়, আবার কেউ কেউ এর কারণে পঙ্গুও হয়ে যান। স্ট্রোক সাধারণত দুই ধরনের হয়। প্রথমটি হল ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং দ্বিতীয়টি হল হেমোরেজিক স্ট্রোক। ইস্কেমিক স্ট্রোকে, জমাট বাঁধার কারণে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালীগুলি বন্ধ হয়ে যায়। এরফলে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। হেমোরেজিক স্ট্রোকে, অতিরিক্ত রক্ত প্রবাহের কারণে রক্তনালী ফেটে যায়। উভয় অবস্থাই মারাত্মক এবং শরীরে পক্ষাঘাত ঘটাতে পারে।
advertisement
আরও পড়ুন: এই তিন ভেষজ ফুসফুসকে সুস্থ রাখে! রক্ষা করে ক্যানসার থেকেও
চিকিৎসক প্রশান্ত আগরওয়াল বলেছেন যে ৫০-৫৫ বছরের বয়সিদের ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি, তবে বর্তমানে অল্প বয়সিরাও এর শিকার হচ্ছেন। বর্তমান যুগে মানুষ অতিরিক্ত মানসিক চাপের সম্মুখীন হচ্ছেন এবং তাদের জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসের অবনতি ঘটেছে, যার কারণে তাঁদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়ছে। সাধারণত অতিরিক্ত রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের কারণে ব্রেন স্ট্রোক হয়। অনেক সময়, হৃদপিন্ডের অংশে জমাট বাঁধা রক্ত মস্তিষ্কে পৌঁছে যায় যা স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। যেসব তরুণ-তরুণী ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগে ভুগছেন তাঁদের স্ট্রোকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
আরও পড়ুন: ঠান্ডার মরশুমে এইসব ফলই বৃদ্ধি করবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা! দূর হবে সর্দি-কাশি
শুধু তাই নয়, যারা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভুগছেন তাঁদের ক্ষেত্রেও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই। অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া এমন একটি সমস্যা কারণে মানুষ ঘুমানোর সময় জোরে জোরে নাক ডাকে এবং ঠিকমতো শ্বাস নিতে পারে না। অবিলম্বে তাঁদের উচিত একজন পালমোনোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করা। অতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপানও ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
তাঁর মতে, ব্রেন স্ট্রোকের সময় শারীরিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। ব্যক্তির দৃষ্টি ঝাপসা হতে শুরু করে। স্ট্রোকের কারণে, কথা বলতেও অসুবিধা হয় এবং কখনও কখনও তাদের মুখ বেঁকে যায়। হঠাৎ মাথা ঘোরা এবং অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থাও স্ট্রোকের লক্ষণ হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, তীব্র মাথাব্যথা এবং বমিও এর লক্ষণ হতে পারে। তাই ব্রেন স্ট্রোকের পর রোগীকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁর চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া উচিত। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে সেই মানুষটি মারাও যেতে পারেন। অথবা শরীরের কোনও অংশ অবশ হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসক প্রশান্ত আগরওয়ালের মতে, স্ট্রোক যাতে না হয় তাঁর আগাম সতর্কতা হিসেবে ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ধূমপান ও মদ্যমান করা ছেড়ে দিতে হবে। হার্টের সমস্যা আছে এমন ব্যক্তিদের চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চলতে হবে। কোনওভাবেই অসতর্ক হলে চলবে না, সবটা মেনে চলতে হবে। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করতে হবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর চিকিৎসকের কাছে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে। এ ছাড়াও যদি স্ট্রোকের কোনও লক্ষণ দেখা দেয় তখন সময় নষ্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। (দাবিত্যাগ: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন )