আমাদের প্রতি দিনের কাজে বা চলাফেরায় সবচেয়ে বেশি বর্জ্য পদার্থ বা ওয়েস্ট তৈরি হয় রান্না ঘরে। এই রান্না ঘরের বর্জ্য ব্য়বস্থাপনার (Kitchen Waste Disposal) দিকে যদি তাকানো হয় তা হলে সারাদিনে জিরো ওয়েস্ট-এর দিকে এক পদক্ষেপ এগোনো যায়। ব্যস্ত মানুষজন অনেকেই এই জিরো ওয়েস্ট এবং রান্না ঘরে তার প্রতিফলন নিয়ে মাথা ঘামাতে চান না। কিন্তু বলা ভালো, এটি মেনে চলতে খুব বেশি পরিশ্রম বা সময় প্রয়োজন হয় না (Kitchen Waste Disposal)। প্রতিদিন কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখলেই চলে-
advertisement
লোকাল দোকান থেকে সবজি বা ফল কেনা
সময় হাতে না থাকায় আজকাল এক ছাদের তলায় অর্থাৎ শপিং মলে গিয়ে বা অনলাইনে সবজি বাজার-ফলের বাজার করে থাকেন অনেকে। কিন্তু সময় পেলেই লোকাল দোকান থেকে বা আশপাশের বাজার থেকে এগুলি কিনলে ফ্রেশ সবজি তো পাওয়াই যায় বাঁচানো যায় বর্জ্যও। কারণ শপিং মল বা অনলাইনে বাজার করলে সবজি ও ফলে অতিরিক্ত প্যাকেট বা কভার দেওয়া হয়। কিন্তু বাজার থেকে এগুলি কিনতে সরাসরি ব্যাগে ভরে নেওয়া যায় ফলে বাড়তি প্যাকেট বা কভারের প্রয়োজন হয় না। এছাড়াও বাজারে সবজি-লমূলের দামও কম তুলনামূলক কমই হয়।
আরও পড়ুন - হাই রিস্ক জোনে রয়েছেন প্রিয়জন? Coronavirus-এর পরিস্থিতিতে কী ভাবে যত্ন নেবেন তাঁদের?
প্লাস্টিকের ব্যবহার
পরিবেশ বাঁচাতে অন্যতম বড় পদক্ষেপ প্লাস্টিকের ব্যবহার না করা। তার কারণ সকলেই জানে। প্লাস্টিকের ব্যবহার আজ অনেক জায়গায়ই বন্ধ। যার পরিবর্তে আজকাল পরিবেশ বান্ধব কোনও ব্যাগ বা রিইউজেবল ব্যাগের প্রচলন বেড়েছে। যখনই গ্রসারি শপিংয়ে বেরোন বাড়িতে থাকা এই রিইউসেবল ব্যাগ নিয়ে বের হলে প্লাস্টিকের প্রয়োজন হবে না বা বাড়তি ব্যাগেরও প্রয়োজন হবে না ফলে বর্জ্যের পরিমাণও কমবে।
দেখে শুনে বাজার করা
বেশিরভাগ সময়ই বাজারে গেলে আমরা লিস্ট করে বা কী কী দরকার তা মনে করে যাই না। গেলেও মনে রাখি না। হাতের সামনে যা পাই তাই কিনে ফেলি। এতে বর্জ্য়ের পরিমাণ বাড়ে। সবজি বেশি থেকে গেলে, বেশিদিন হয়ে গেলে তা নষ্টও হয়ে যায়। তাই একটা লিস্ট করে বাজারে গেলে প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা যায় এবং নষ্টও হয় না।
আরও পড়ুন - লেবুর জল না মেথির জল, ওজন কমাতে কোনটা সেরা? বিভ্রান্তিতে না ভুগে জেনে নিন এখনই
বাড়িতেই গাছ লাগানো
বিভিন্ন শাক, বিশেষ করে পুদিনা পাতা, ধনে পাতা বাইরে থেকে কিনলে তা প্যাকেট বা কভার ছাড়া দেওয়া সম্ভব হয় না। তাই এই ধরনের হার্বসগুলি বাড়িতেই চাষ করা যায়। টবে গাছ পুঁতলে খুব সহজেই এই গাছগুলি যে কোনও বাড়িতে হতে পারে। একদিকে যেমন বর্জ্য বাঁচবে, অন্য দিকে তেমন ফ্রেশ জিনিসও খাওয়া সম্ভব হবে।
অবশিষ্ট খাবারের সঠিক ব্যবহার
অনেক সময়ই সঠিক পরিমাণে খাবার বানানো হয় না বা খাবার বেঁচে যায়। এই খাবারগুলি ফেলে না দিয়ে পরের দিন রান্নায় ব্যবহারের চেষ্টা করতে হবে। এমন রেসিপি তৈরি করতে হবে যাতে লেফ্ট ওভারগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায় এবং বোঝাও না যায়। এতে অনেকটাই বর্জ্য আমাদের রান্না ঘর থেকে বেঁচে যাবে।
অল্প খাবার ছোট জায়গায় রেখে খাওয়া
অল্প খাবার ছোট জায়গায় রেখে খাওয়ার চেষ্টা করলে এতে খাবার ফেলে দেওয়ার প্রবণতা কমে। দেখেই অনেক খাবার মনে হয় না। যদি খিদে না মেটে তা হলে আবার নেওয়া যায়, কিন্তু খাবার কখনওই নষ্ট করা উচিত হবে না।
পড়ে থাকা বাক্স বা জারের ব্যবহার
অনেক সময়ই আকারের কারণে বা পুরনো হয়ে যাওয়ায় কারণে জার বা বাক্স আর ব্যবহার করতে ভালো লাগে না। এমন জার বা বাক্স ফেলে না দিয়ে সেটিকে ভালো করে ধুয়ে তাতে প্যাকেটের কোনও খাবার রাখা যেতে পারে, যা খোলা রাখলে হয় তো পচে যাবে। এছাড়াও এই ধরনের বাক্স বা জারে গাছও লাগানো যেতে পারে। এতেও বর্জ্যের পরিমাণ আমাদের রান্না ঘরে কমবে।