বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালেই বোঝার অপেক্ষায় রাখে না, সুবিশাল এই অট্টালিকার মাথায় তিনজন পরী থাকায় এরূপ নামকরণ। জানা যায়, মূলত দরিদ্র মানুষের বসবাস ছিল এই এলাকায়। পরবর্তীতে নবাব সৈন্য সামন্ত নিয়ে প্রায় এক মাসের মতো এই এলাকায় আস্তানা করেছিলেন। সেই থেকেই এই এলাকার নাম হয় নবাবগঞ্জ। গঙ্গা তীরবর্তী তখনকার এই প্রত্যন্ত এলাকা ধীরে ধীরে মণ্ডল পরিবারের সদস্যদের উদ্যোগে উন্নতি লাভ করতে থাকে। সে সময়ে, ইচ্ছাপুর নবাবগঞ্জের এই বাড়ির ইতিহাস ঘাঁটলে উঠে আসে বাঞ্ছারাম মণ্ডলের নাম। আর সেই থেকেই এ বাড়ির আর এক নাম মণ্ডল ভবন।
advertisement
আরও পড়ুন : ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে তারাপীঠ মন্দিরে বিয়ে করতে চান? জানুন দরকারি নিয়ম
পরিবার সূত্রে জানা যায়, বাড়িটি তৈরি হয় ১৯০৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। এ বাড়ি তৈরি করিয়েছিলেন গদাধর মণ্ডল। বাড়ির বাইরে তাঁর নামের ফলক আজও শোভা পায়। গঙ্গার পাশে এই সুবিশাল ঐতিহ্যশালী বাড়ির ছাদ থেকে গঙ্গা দেখলে, এক আলাদা নৈসর্গিক সুখের অনুভূতি হয়। প্রকৃতির এই সুন্দর রূপ দেখে কয়েক ঘণ্টা হামেশাই কাটিয়ে দেওয়া সম্ভব। সুবিশাল এই বাড়ির অন্দরে রয়েছে ঠাকুরদালান। সেখানেই বহু বছর ধরে হয়ে আসছে দুর্গা পুজো। এছাড়াও বারো মাস নানা উৎসব অনুষ্ঠান হয় এই বিশেষ বাড়িকে কেন্দ্র করে।
বাড়ির সামনেই ছিল ইতালিয়ান মার্বেলের প্রায় সাড়ে ছয় ফুট লম্বা একটি বিশেষ পরী, যা চুরি গিয়েছে বলেও জানান পরিবারের এক সদস্য। জানা যায়, পরীবাড়িতে শ্যুটিং হয়েছে বেশ কিছু জনপ্রিয় সিনেমার দৃশ্যের। মণ্ডল পরিবারের বংশধরেরা বর্তমানে এই বাড়িতে বসবাস করেন। সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ জন সদস্যের বাস বলেই জানা গিয়েছে। তাই বসতবাড়ি হওয়ার কারণে, এখনও পর্যটক হিসেবে বাড়ির অন্তরে পুজোর সময় বাদ দিয়ে প্রবেশ করা অনুমতি নেই। তবে বাড়ির সামনে দাঁড়ালেও, প্রকৃতি আর ইতিহাসের মেলবন্ধনে এক অপরূপ সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। ইছাপুর স্টেশনে নেমে অটো ধরে সোজা মণ্ডল ঘাট। আর সেই ঘাটের পাশেই রয়েছে এই পরী বাড়ি। প্রতিদিনই বহু মানুষ ভ্রমণ করতে এই বাড়ির সামনে আসেন। ইতিহাসের সাক্ষী নিয়ে গঙ্গা তীরবর্তী সৌন্দর্য উপভোগের কারণেভ্রমণপিপাসু মানুষদের কাছে গুরুত্ব লাভ করছে এই স্থান।