এই বিষয়ে কথা বলছেন বেঙ্গালুরুর ইলেকট্রনিক সিটির কাবেরী হাসপাতালের কনসালট্যান্ট নিউরোলজিস্ট ও এপিলেপ্টোলজিস্ট এমডি, ডিএম (নিউরোলজি) ডা. সোনিয়া তাম্বে।
মাথা ব্যথা:
মাথা ব্যথা হল সবথেকে সাধারণ স্নায়বিক সমস্যার উপসর্গ। এমনকী ঘাড়ের আশপাশে কোনও ব্যথাও এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। প্রাথমিক ভাবে মাথা ব্যথা শুরু হয়। সেখানে অবশ্য মাইগ্রেন, টেনশন কিংবা সেকেন্ডারি মাথা ব্যথার মতো কোনও বিষয় থাকে না। ফলে বারবার তীব্র মাথা ব্যথা, জ্বর, অবসন্ন ভাব, কোনও কিছু দেখতে সমস্যা, খিঁচুনি কিংবা কোনও আঘাত লাগার পরে মাথা ব্যথা হলে কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। মস্তিষ্কের অ্যানিউরিজম ফেটে গেলে তীব্র মাথা ব্যথা হয়, এমনকী এটা প্রাণঘাতীও হতে পারে।
advertisement
ব্যথা:
স্নায়ুর ক্ষতি হলে নিউরোজেনিক ব্যথা শুরু হয়। ডিস্ক সংক্রান্ত রোগ, স্পনডিলোসিস, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস ইত্যাদিও এর কারণ হতে পারে। কখনও কখনও দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা হয় ফাইব্রোমায়ালজিয়ার কারণে। এটা আসলে এক ধরনের সমস্যা। যেখানে মাস্কুলোস্কেলেটাল সংক্রান্ত ব্যথা হয়। এর সঙ্গে অবসন্ন ভাব, ঘুম পাওয়া, স্মৃতিজনিত সমস্যা প্রভৃতিও থাকে।
আরও পড়ুনঃ খান কচি নিমপাতা! দূরে যাবে নানা রোগ! কিন্তু বেশি খেলেও ক্ষতি! জানুন নিয়ম
ভার্টিগো:
ভার্টিগোর ক্ষেত্রে মাথা ঘোরে। শরীর শিথিল হয়ে আসে। এমনকী দৈহিক ভারসাম্যও নষ্ট হয়। এটা মূলত দুই ধরনের হয় - পেরিফেরাল ভার্টিগো এবং সেন্ট্রাল ভার্টিগো। পেরিফেরাল ভার্টিগোর কারণে আচমকা মাথা ঘোরে এবং তা স্বল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হয়। মাঝেমধ্যেই এটা হতে থাকে। কানে টিনিটাস অথবা শোনার সঙ্গে সম্পর্কিত জটিলতা, এমনকী কখনও কখনও বমিও হয়। মস্তিষ্কের ভিতর ঘটা সমস্যার কারণে সেন্ট্রাল ভার্টিগো হতে পারে। দীর্ঘ দিনের ভার্টিগো, ভারসাম্যহীনতা, দৃষ্টিহীনতা, শরীর অবশ হয়ে আসা, করোটির স্নায়বিক দুর্বলতার সঙ্গে এটা সম্পর্কিত। তীব্র ভার্টিগো হতে পারে স্ট্রোকের কারণে।
খিঁচুনি:
মস্তিষ্কের কোষের মধ্যে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে ইলেকট্রিক্যাল অ্যাক্টিভিটি হলে পেশি সঞ্চালনে অস্বাভাবিকতা দেখা যায়। এর পাশাপাশি, আচরণ, অনুভূতি ইত্যাদির ক্ষেত্রেও অস্বাভাবিকতা আসে। ওষুধ, জ্বর অথবা মৃগীরোগের মতো তীব্র সমস্যার জেরে খিঁচুনি হতে পারে। এটা আবার নানা ধরনের হয়। এক ধরনের খিঁচুনি দেহের একটি অংশে শুরু হয়ে তা সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে। খিঁচুনি প্রতিরোধে ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রাম, ব্রেনের এমআরআই এবং ক্লিনিক্যাল তথ্য প্রয়োজন।
আরও পড়ুনঃ কাজে বেরোনোর আগে হাঁচি? শুভ না অশুভ? জেনে নিন হাঁচির ফল ও ঝটপট হাঁচি বন্ধের টিপস!
প্যারালাইসিস/ দুর্বলতা:
শরীর সক্রিয় এবং সচল থাকবে, এটাই তো কাম্য। ফলে দেহের কোনও অংশে দুর্বল ভাব এলে তার ক্ষতিকর প্রভাব থাকে। মুখের পেশি দুর্বল হলে তাকে ফেসিয়াল পালসি বলা হয়। আবার কোনও একটা অঙ্গের দুর্বলতাকে মোনোপারেসিস, দেহের অর্ধেক অংশের দুর্বলতাকে হেমিপারেসিস এবং দুই পায়ের দুর্বলতাকে প্যারাপারেসিস বলা হয়। আচমকা দুর্বল ভাব এলে তা কিন্তু স্ট্রোকের উপসর্গ হতে পারে।
স্মৃতিভ্রংশ:
বিশেষ করে বয়স্করা স্মৃতিশক্তি নষ্ট হওয়ার বিষয়ে বেশি অভিযোগ করে থাকেন। একটা নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত স্মৃতিভ্রংশ হল বয়স বৃদ্ধির স্বাভাবিক অংশ। ডিমেনশিয়ার উপসর্গ হল, সব কিছু ভুলে যাওয়া, আর্থিক বিষয় নিয়ন্ত্রণে সমস্যা, রোজকার জীবনযাপনে সমস্যা প্রভৃতি। আর এটা এমন একটা রোগ, যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। ডিমেনশিয়ার অবশ্য কোনও চিকিৎসা নেই। ওষুধ এবং থেরাপির মাধ্যমে উপসর্গগুলি নিয়ন্ত্রণ করা যায় মাত্র।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)