আশা: ইতিবাচক সূচনা
বেশির ভাগ মহিলার ক্ষেত্রেই পরিবার গড়ে তোলার জন্য ইতিবাচক সূচনা হল সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে সন্তানধারণ। প্রথম কয়েকটা মাস বেশ আনন্দ-উচ্ছ্বাস এবং স্বপ্নে কাটে। মহিলারা মাসিক চক্র অধীর আগ্রহে ট্র্যাক করেন। বারংবার চেষ্টা করেন এবং অবশেষে সুখবরটা এলে তা সকলের সঙ্গে শেয়ার করারও উদ্দীপনা থাকে। এই পর্যায়ে থাকে একরাশ আশা, ভরসা এবং বিশ্বাস।
advertisement
আরও পড়ুন: লাগাতার কাজ থেকে ছুটির প্রয়োজন, বছরে কতবার বেড়াতে যাওয়া উচিত জানেন?
মনে ভাঙন: হতাশার যন্ত্রণা
একের পর এক মাস কেটে যায়। ধীরে ধীরে ঘোরে বছরও। আশাতেও যেন জল পড়ে যায়। সেই সঙ্গে আসে মন ভাঙার যন্ত্রণাও। প্রেগনেন্সি টেস্ট কিটে বারবার নেগেটিভ আসা কিংবা বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসার ব্যর্থতার কারণে হতাশা ঘিরে ধরতে থাকে। এই কারণে নিজেকে হীন মনে করা, লজ্জা, অপরাধবোধ, নিজেকে দোষারোপ ইত্যাদিও চলে আসে। এই অবস্থায় মহিলারা নিজেদেরকে গুটিয়ে নেন।
অনিশ্চয়তা: অনুভূতির উত্থান-পতন
বন্ধ্যাত্বে লুকিয়ে থাকে অনুভূতির উত্থান-পতন। মাতৃত্বের সফর নিয়ে আশা-নিরাশা এবং আনন্দ-দুঃখের মধ্যে ডুবে থাকেন তাঁরা। এই প্রক্রিয়ার অনিশ্চয়তার কারণে উত্তেজনা এবং মানসিক টানাপোড়েন বাড়তে থাকে। যার প্রভাব পড়ে মানুষের ভাল থাকা এবং সম্পর্কের উপর বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে। মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব থাকে গভীর। দুঃখ, বেদনা, রাগ এবং হতাশা ঘিরে ধরতে থাকে।
আরও পড়ুন: আয়ুর্বেদিক ওষুধ খেলে কিডনিতে পাথর হয়? চিকিৎসকরা যা বলছেন জানলে চমকে যাবেন
সম্পর্কের উপর প্রভাব:
বন্ধ্যাত্বের প্রভাব পড়ে সমস্ত সম্পর্কেই। সন্তানধারণের চাপের কারণে অশান্তি শুরু হয়। সঙ্গীর সঙ্গেও অনেক ক্ষেত্রে ঝামেলা চলতে থাকে। অনেক সময় আবার বাচ্চাদের কোনও অনুষ্ঠানে গেলেও একাকীত্ব এবং দুঃখের অনুভূতি ঘিরে ফেলে। খোলাখুলি কথা বলা, সহানুভূতি এসবের মাধ্যমে সমস্যা কাটানো সম্ভব। সেই সঙ্গে পেশাদার বিশেষজ্ঞদেরও পরামর্শ নেওয়া উচিত। এতে সম্পর্ক মজবুত হবে।
সাহায্যের সন্ধান:
এই সফরটা খুবই চ্যালেঞ্জিং। মহিলারা বন্ধ্যাত্ব সংক্রান্ত মানসিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য চেষ্টা করেন এবং তাঁদের সেই সাহায্যের প্রয়োজন হয়। তাই বহু মহিলাই বিভিন্ন সাপোর্ট গ্রুপ, অনলাইন ফোরাম এবং কাউন্সেলিংয়ের জন্য উপস্থিত হন। এমন কারওর সঙ্গে নিজেদের অভিজ্ঞতা, অনুভূতি ভাগ করে নেওয়া উচিত, যাঁরা বিষয়টিকে বুঝতে পারবেন। নিজের খেয়াল রাখার জন্য এক্সারসাইজ, মেডিটেশন এবং নিজের পছন্দের কাজে মনোনিবেশ করতে হবে। এতে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এছাড়া থেরাপিস্ট অথবা ফার্টিলিটি স্পেশালিস্টের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যেতে পারে।
সুস্থতা:
বন্ধ্যাত্ব থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার সফরটা ধীরে ধীরে হয়। বিকল্প পথের সম্ভাবনা খুঁজে বার করতে হবে। নিজের যত্ন নেওয়া এবং উন্নতির দিকে নজর দিতে হবে। বন্ধ্যাত্বে আক্রান্ত মহিলাদের দত্তক গ্রহণ, সারোগেসির মতো বিকল্প পথ বেছে নিতে হবে। এমনকী সন্তান ছাড়াই জীবন কাটানোর উপায়ও বেছে নেওয়া যেতে পারে। সুস্থতার বিষয়টা সকলের জন্য সমান নয়, ফলে এক্ষেত্রে ঠিক-ভুল কোনও কিছুই নেই।