শীতের মরশুম আসতে না আসতেই বাজারে সবুজ তরতাজা শাকসবজির দেখা মিলতে থাকে। মধ্যপ্রদেশের রেওয়ার সবজি বাজারও তার ব্যতিক্রম নয়। সেই টাটকা-তাজা সবুজ শাকসবজি কেনার জন্য বাজারে সবজির দোকানগুলিতে ভিড় চোখে পড়ার মতো। রেওয়ার বাসিন্দাদের বক্তব্য, শীতের দিনে তাঁরা ভাতের সঙ্গে টাটকা শাকসবজি খেতে খুবই পছন্দ করেন। কারণ শাক হল মরশুমি সবজি। আর প্রত্যেক সাধারণ মানুষের বাজেট অনুযায়ী বাজারে এই সব শাকসবজি পাওয়া যায়।
advertisement
দোকানদারেরা বলছেন যে, রেকর্ড ভাঙা শাকসবজি বিক্রি হচ্ছে বাজারে। আর সবথেকে বেশি রমরমিয়ে বিকোচ্ছে পালং শাক, মেথি শাক, বথুয়া শাক, লাল শাক, ছোলা শাক ইত্যাদি। আর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বেশ সস্তা দামেই পাওয়া যাচ্ছে এইসব শাকসবজি। কিছউ শাকসবজি তো শুধুমাত্র শীতের মরশুমেই পাওয়া যায়। সেই কারণে এই সব শাকসবজি মানুষের পছন্দের তালিকায় চলে এসেছে।
সবুজ শাকসবজিতে রয়েছে প্রোটিন: রেওয়ার সুপার স্পেশাল্টি হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ডা. অক্ষয় শ্রীবাস্তব বলেন যে, সবুজ শাকসবজি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ভাল। প্রত্যেকেরই তা পাতে রাখা উচিত। কিন্তু সময়ে তা খেতে হবে। সাধারণত ব্রেকফাস্ট এবং লাঞ্চে এই সবুজ শাকসবজি খাওয়া উচিত। শাকসবজির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। ফলে তা হজম করতে বেশ সময় লাগে। প্রত্যেক শাকসবজির মধ্যে নিজস্ব ভিন্ন ভিন্ন উপাদান থাকে। আর সঠিক সময়ে তা সেবন করা হলে সেটা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে প্রমাণিত হবে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা না থাকলে দিনে একবার কিংবা ২ বার সবুজ শাকসবজি খাওয়া যেতে পারে। অন্যদিকে যদি হাড় সংক্রান্ত কোনও রোগ থাকে, তাহলে সেটা রোজ খাওয়া উচিত নয়। বরং সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার খাওয়া উচিত।
স্বাস্থ্য উপযোগিতা
পালং শাক:
পালং শাক আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এমনকী ত্বক, চুল এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য এই শাক দারুণ। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। মহিলারা যদি প্রতিদিন পালং শাক পাতে রাখেন, তাহলে তাঁদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি হবে না। সেই সঙ্গে পালং শাক ক্যানসারের ঝুঁকিও কমাতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে হাড়ের সমস্যাও প্রতিরোধ করে। কারণ পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে থাকে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রন।
বথুয়া শাক:
চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ব্যাপক ভাবে উপকারী বথুয়া শাক। কারণ এই শাকের মধ্যে থাকে ভিটামিন এ। যা দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়। এর পাশাপাশি, বথুয়া শাকের মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাভনয়েড এবং ক্যারোটিনয়েড। যা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। ফলে এই শাক শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়া বথুয়া শাকের মধ্যে জিঙ্কও থাকে। যা সংক্রামক রোগের সঙ্গে দেহকে মোকাবিলা করার শক্তি জোগায়।
মেথি শাক:
হার্ট এবং ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী মেথি শাক। সুগার এমনকী পেটের সমস্যা কমাতেও দারুণ কার্যকর এটি। শরীরকে গরম রাখতেও সহায়ক মেথি শাক। আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও শক্তিশালী করে।
সর্ষে শাক:
সর্ষে শাকের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। ফলে এই শাক খাওয়ার হাজারো উপকারিতা রয়েছে। এই শাকের মধ্যে থাকে ফাইবার, ভিটামিন কে, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি৬ এবং ভিটামিন সি। যা ইমিউনিটি গড়ে তুলতে সহায়ক। সেই সঙ্গে শীতের মরশুমী একাধিক সমস্যার হাত থেকেও শরীরকে রক্ষা করে।
ছোলা শাক:
সুস্বাদু এই শাক শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কিন্তু অনেকেই এর উপযোগিতার কথা জানেন না। এর মধ্যে যেহেতু প্রচুর প্রোটিন থাকে, তাই ওজন কমানোর জন্য দারুণ বিকল্প এটি। আর সবথেকে বড় কথা হল, ছোলা শাকের মধ্যে ক্যালোরির পরিমাণ অত্যন্ত কম। সেই সঙ্গে এটি ইমিউনিটি বাড়াতেও দারুণ সহায়ক।
