আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে কলাপাতায় ভোজনের একাধিক গুণাগুণের কথা বলা হয়েছে৷ যে সব উপাদান কলাপাতার আস্তরণে থাকে তাদের মধ্যে অন্যতম পলিফেনল অথবা এপিগ্যালোক্যাটেচিন গ্যালাট বা ইজিসিজি৷ এই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট উপাদান গ্রিন টি-তেও অন্যতম৷ কলাপাতার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট উপাদান জীবাণুনাশক এবং ক্যানসারের মতো জটিল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে কার্যকর৷ কলাপাতার উপর একটা মোমের প্রলেপ থাকে ৷ এর সূক্ষ্ম সুবাস গরম খাবারে মিশে খাবারকে আরও উপাদেয় করে তোলে৷
advertisement
এই মোমের পিচ্ছিল আবরণের জন্যই কলাপাতায় জল দাঁড়ায় না অর্থাৎ তা ওয়াটারপ্রুফ৷ কলাপাতায় আহারের অভ্যাস থাকলে ত্বকের অসুখ, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য গ্যাস, বদহজমের মতো সমস্যার তীব্রতা কম হয় বলে মনে করেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা৷ পচনশীল কলাপাতা সহজেই মিশে যায় মাটির সঙ্গে ৷ তাই থার্মোকল বা অন্যান্য কৃত্রিম উপাদানের বাসনের তুলনায় এটা ব্যবহার করা অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব৷
পাশাপাশি, কলাপাতায় আছে ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধকারী বেশ কিছু উপাদান। আবহাওয়া বদলের সময়ে আচমকা ঠান্ডা লাগা কিংবা সর্দি হওয়ার ঝুঁকি লেগেই থাকে। কলা পাতার অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান গলাব্যথা, সর্দি-কাশি কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া কলাপাতার অ্যালোয়েনটাইন উপাদান পেটের যে কোনও সমস্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যাঁদের পেটের ক্রনিক সমস্যা থাকে, তাঁরাও কলাপাতায় খেতে পারেন। হজমশক্তি বাড়াতেও দারুণ উপকারী এই পাতা।
আরও পড়ুন : ব্লাড সুগারে কি বাঁধাকপি খাওয়া ভাল না ক্ষতিকর? জানুন বিশেষজ্ঞের মত
কলাপাতায় প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট আছে। তাই কলাপাতা ডিটক্সিফাই করে। এর ফলে শরীরের অতিরিক্ত টক্সিন বেরিয়ে যায়। ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। কলাপাতায় থাকে এমন কিছু উপাদান যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে। যার ফলে রোগের প্রকোপ থেকে মুক্তি যেমন পাওয়া যায় তেমনই শরীরও সুস্থ থাকে।
তবে কলাপাতায় খাওয়ার কিছু বিপত্তিও থাকতে পারে। যে কলাপাতায় খাবেন, সেটা আগে ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। যাতে কোনওরকম ময়লা বা পোকামাকড় না থাকে। অনেক সময়েই গাছের পাতায় কীটপতঙ্গ বাসা বাধে। গুটির মধ্যে বাসা বাঁধে নানা কীট। তাই এগুলি যাতে পেটে চলে না যায়, তার জন্য খাওয়ার আগে সময় নিয়ে কলাপাতা ধুয়ে রাখুন।