বাংলার বারো মাসে তেরো পার্বন। কৃষিজীবী সমাজে শস্য উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে যে সকল আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব পালিত হয়, নবান্ন তার মধ্যে অন্যতম। নবান্ন উৎসব হল নতুন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব।
আরও পড়ুনঃ কাঁসা-পেতলের অনেক গুণ! চিকিৎসকের কথা শুনলে আজ থেকে শুধু ওই বাসনেই খাবেন
advertisement
গ্রামবাংলায় এই নবান্ন উৎসব রাতে অনুষ্ঠিত হলেও এ দিন সকাল থেকেই তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে নতুন চাল, গুড়-সহ একাধিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে শহর থেকে গ্রামের হাট-বাজারগুলিতে উপচে পড়া ভিড়।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে প্রকৃতির খামখেয়ালির জন্য দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে ধানের বীজ রোপন করতে অনেকটাই দেরী হয়ে যায়। ফলে সমস্যায় পড়তে হয় ধান চাষীদের। নতুন ধানের আগমনে এই উৎসব আজও সাড়ম্বরে পালিত হয় বাংলার ঘরে ঘরে৷ সকাল থেকে গৃহস্থবাড়ির মহিলা কিংবা পুরুষরা নতুন জামা-কাপড় পড়ে নিজের জমিতে গিয়ে পুজো করে ধান গাছ কেটে মাথায় করে নিয়ে আসে বাড়িতে। এরপর সেই ধান গাছকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের আচার-অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।
লোকসংস্কৃতি অনুযায়ী, হেমন্তের নতুন আমন ধান ঘরে এনে প্রথমে তা গৃহদেবতাকে নিবেদন করা হয়। যেহেতু দেবতার বরে ফসল ফলে, সেই জন্য দেবতাকে সন্তুষ্ট করার প্রয়াস সব কৃষকই করে থাকেন। সামাজিক প্রথা, রীতি মেনে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব পালনের প্রথা রয়েছে।অত্যাধুনিক যুগেও এখনও পর্যন্ত লোকাচার মেনে বাড়ির পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে নতুন অন্ন নিবেদন করে থাকেন। মাঠ থেকে নতুন ধান কেটে আনার পর বিভিন্ন ধরনের নিয়ম-কানুন করে থাকেন বাড়ির মহিলারা।পাশাপাশি, গৃহস্থ বাড়ির সামনে জীবকূলের উদ্দেশ্যে নতুন চাল ছিটিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে। এখনও পর্যন্ত গ্রামবাংলায় এই রীতি প্রচলন রয়েছে।
সুস্মিতা গোস্বামী