কথা হল, দুর্গাষ্টমীর অঞ্জলি মানেই বেশিরভাগ মহিলাই একবাক্যে হাতে তুলে নেন জামদানি। পুজোর ভিড়ে জামদানি চোখে পড়বে না, এমনটা কখনও হয় না। দলে আলাদা হতে চাইলে তাহলে কর্তব্যটা কী?
বেছে নিতে হবে নানা প্রদেশের শাড়ি। যা চট করে সবার মাথায় আসবে না। সব চেয়ে বড় কথা, যে তালিকা দেওয়া হল, তা বিশেষ ভাবে বোনা শুরুই হয়েছিল দেবীর জন্য। পাওয়া যাবে অনলাইনে, এখন অর্ডার দিলে এসেও যাবে দিন কয়েকের মধ্যে। তার পর দর্জিকে একটু হাতে-পায়ে ধরে ব্লাউজটাও করিয়ে নিলেই আর পায় কে!
advertisement
১. মনমোহন মুগা
অসমের সাবেকি শাড়ি, এখন নানা রঙে এলেও আদতে এর বুনন লাল-সাদাই। জমি জুড়ে ইতিউতি কলকা, তেকোণা বা নেহাতই সাবেকি ফুল বুটি, পাড়ে আর আঁচলে ভারি আলপনার মতো লতার নকশা- মেজাজে একটু জামদানির মতো হলেও তত হালকা নয়, বরং দেবীর রূপের গাম্ভীর্যই নিয়ে আসবে। অসমের বিখ্যাত কালিকাপুরাণও বলছে- দেবীর নিত্য সাজের অপরিহার্য অঙ্গই এই মুগা (Muga Saree) শাড়ি, বিশেষ করে তা যদি লাল-সাদা হয়।
আরও পড়ুন: পুজোয় ঘরে আলপনা খুবই সুন্দর, কিন্তু কোন ডিজাইনে মঙ্গলাচার হয় না জানুন
২, কটি বেয়ে নবকোটি
এ রীতিমতো পবিত্র বস্ত্র। বোনা শুরু হয়েছিল জগন্নাথের জন্য। একে একে গায়ে উঠেছে শক্তিরূপিণী সুভদ্রা, বিমলারও। ওড়িশার এই খান্ডুয়া (Khandua Saree) বা নবকোটি শাড়ির (Navkoti Saree) তাই ব্যাপারই আলাদা। আঁচলে-পাড়ে গীতগোবিন্দের কোনও এক দৃশ্য এক লহমায় পুজোর দিন জমজমাট করে তুলবে। আর জমি? আসল মজা তো সেখানেই। খোপের ভিতরে থাকবে মঙ্গল কলস, পশু, পাখি, ফুল- সব মিলিয়ে নয়টি পবিত্র চিহ্ন। নানা রঙে পাওয়া গেলেও দুর্গাষ্টমীর দিন লাল-সাদা নবকোটি পরলে সবাই মনে রাখবে।
আরও পড়ুন: পুজোর আগেই কমবে ভুঁড়ি! সুঠাম-পেশিবহুল দেহ পেতে আজ থেকেই শুরু করুন...
৩. ময়ূর বুটি কাঞ্চীপুরম
যেমন রেশম, তেমনই সুতির শাড়ির জন্যও প্রসিদ্ধি আছে দক্ষিণ ভারতের এই এলাকার। কাঞ্জিভরম নয় কিন্তু, আমরা বলছি কাঞ্চীপুরম শাড়ির (Kanchipuram Saree) কথা। কাঞ্চীপুরমের মজাই এই- ভারিও নয়, হালকাও নয়, এমন আভিজাত্যে শরীর মুড়ে দেয়। এক্ষেত্রে লাল-সাদা রঙের সঙ্গে বিশেষ করে বেছে নেওয়া যায় ময়ূর বুটি। চেক শাড়ির খোপে খোপে একটায় ময়ূর, অন্যটায় ফুল- ধ্রুপদী সাজের জন্য আর কী চাই! দেশের অন্যতম বিখ্যাত মন্দিরের অধিষ্ঠাত্রী কামাক্ষী দেবীরও বিশেষ পছন্দ এই শাড়ি, দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণীর যেমন বারাণসী বস্ত্র!
৪. শরীর-কোণে কোনরাড়
এই শাড়িও দক্ষিণ ভারতের, বলাই হয় একে মন্দির শাড়ি। কেন না, খাস দেবীর জন্যই তৈরি হত কোনরাড় (Konrad Saree)। ভারি জরির আঁচল-পাড়, জমিতে কিন্তু শুধুই একটু বড় চেক। খুব সাদামাটা লাগছে কি? যে শাড়িতে দেবীর অঙ্গসজ্জা হয়, তা কি তাঁরই পুজোর দিনে নজরকাড়া না হয়ে যায়?
৫. গরদ নয়, গাদোয়াল
জামদানির মতো লাল-সাদা গরদও পরবেন অনেকেই। সেই ভিড় বাঁচাতে কাজে আসবে ওই একই রঙের গাদোয়াল (Gadwal Saree)। চওড়া পাড় আর আঁচলের লাল-সোনালি জরি আলো ছড়াবে গর্জন-তেলমাখা দেবীর মুখের মতো, সাদা খোলে জমা থাকবে শ্রদ্ধার সবটুকু। মজার ব্যাপার হল, এও কিন্তু পুজোর শাড়ি- ব্রহ্মোৎসবের প্রথম দিনে দেবী লক্ষ্মী, দেবী পদ্মাবতীর সঙ্গে তিরুপতিও ধারণ করেন তেলঙ্গানার এই সাবেকি বসনের বুনন।
