হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন, 'নিরামিষ মাংস' (Vegetarian Mutton)! আসলে কয়েকশো বছর আগে বাঙালি ব্রাহ্মণরা পেঁয়াজ ও রসুন-কে আমিষ সবজি হিসাবে গণ্য করতেন। তাই এগুলি বাংলার কোনও ঠাকুরের ভোগ রান্নায় ব্যবহৃত হয় না। আর বাংলার অনেক মন্দিরেই বহু বছর ধরে মাকে এই প্রথায় বলির পাঁঠার মাংস নিবেদন করার রীতি চালু রয়েছে, তাই পরম্পরা সূত্রে নিরামিষ মাংসের স্বাদ বাঙালির কালীপুজোয় জড়িয়ে গিয়েছে। একইসঙ্গে পেঁয়াজ-রসুন ছাড়া তৈরি হয় বলেই এই রান্নাকে নিরামিষ বলা হয়। যদিও বর্তমানে বলির প্রথা বেশিরভাগ জায়গায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন- আলোর উৎসব আর ক'দিন পরই, দীপাবলিতে ঘর সাজান এই আলোগুলি দিয়ে
দেখে নেওয়া যাক কালীর পুজোর নিরামিষ মাংসের ঝোল তৈরি করতে কী কী লাগবে আর কী ভাবেই বা তা বানাতে হবে-
উপকরণ
হাড় সহ কচি পাঁঠা- ১ কেজি
আংশিক সেদ্ধ এবং ৩/৪ ভাগ ভাজা আলু- ৮টি
নুন- ৪ চা চামচ
কালো লবণ- ১ চা চামচ
দই- ২৫০ গ্রাম
হলুদ বাটা- ২ চা চামচ
আদা বাটা- ১.৫ টেবিল চামচ
ভালো ভাবে সেঁকে নেওয়া ধনে গুঁড়ো- ১.৫ টেবিল চা চামচ
ভালো ভাবে সেঁকে নেওয়া পাঁচ ফোড়নের গুঁড়ো- ৩/৪ চা চামচ
ভালো মানের গাওয়া ঘি- ১ কাপ
সরষের তেল- ১/২ কাপ
চিনি- ১.৫ চা চামচ
লাল লঙ্কার গুঁড়ো- ২ চা চামচ
কাঁচা লঙ্কা- ৬টি
সবুজ এলাচ- ১৫টি
তেজ পাতা- ৪টি
লবঙ্গ ১৫টি
গরম জল- ১ লিটার
প্রণালী
মাঝারি আকারের পাঁঠার টুকরোগুলি ২.৫ চা চামচ নুন, ১ চা চামচ হলুদ বাটা এবং আদা বাটা দিয়ে মেখে ঘরের তাপমাত্রায় ২ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। তার পর দই মিশিয়ে আরও ২ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখতে হবে।
একটি কড়াইতে প্রথমে তেল গরম করতে হবে। গরম তেলে তেজপাতা, সবুজ এলাচ এবং লবঙ্গ দিতে হবে। কয়েক সেকেন্ড নাড়াচাড়া করে ম্যারিনেট করা মাংস দিতে হবে। ম্যারিনেটের অতিরিক্ত মশলা আলাদা রাখতে হবে।
আরও পড়ুন-ব্রেস্ট ক্যানসার রোগিণীদের ডায়েটে কি বাদাম থাকা প্রয়োজনীয়?
প্রথমে ১৫ মিনিট মাংসটি বেশি আঁচে রান্না করতে হবে।
এবার গ্যাসের ফ্লেম মাঝারি রেখে ১ ঘণ্টা ঢেকে রান্না করতে হবে। এই সময় প্রতি ১০ মিনিট অন্তর ঢাকনা সরিয়ে পাঠাঁর মাংসটি ভালো ভাবে নাড়তে হবে।
এক ঘণ্টা হয়ে গেলে রান্নায় গাওয়া ঘি দিতে হবে৷ সঙ্গে আলু, বাকি নুন, হলুদ বাটা, ধনে গুড়ো এবং লাল লঙ্কার গুঁড়ো মেশাতে হবে। এই সময় ৩ টেবিল চামচ জল ছড়িতে দিতে হবে যাতে মশলা পুড়ে না যায়। ওই আলাদা করে রাখা অতিরিক্ত ম্যারিনেটের মশলাও এই সময়ে দিতে হবে৷ এবার অনবরত নাড়তে হবে। গ্যাসের আঁচ বাড়িয়ে ২০ মিনিটের মতো রান্না করতে হবে।
এর পর জল গরম দিয়ে কালো লবণ, চিনি, কাঁচা লঙ্কা এবং বাড়িতে তৈরি পাঁচ ফোড়নের গুঁড়ো মেশাতে হবে। ঝোল ভালো করে নাড়িয়ে নিতে হবে যাতে কালো লবণের স্বাদ মিশে যায়।
আরও পড়ুন- দীপাবলির আনন্দ দ্বিগুণ করে দেবে মুচমুচে পদ্মনিমকির স্বাদ, রইল রেসিপি!
মাংস ভালো ভাবে সেদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত ঢাকনা বন্ধ করে কম আঁচে আরও কিছুক্ষণ রান্না করতে যেতে হবে।
প্রেশার কুকারে করলে তিনটি সিটি না পড়া পর্যন্ত কম আঁচে রান্না করতে হবে। এবার গ্যাস বন্ধ করে ১৫ মিনিট পরে কুকার খুলতে হবে।