শতাব্দী প্রাচীন মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের অমৃতি শিব মন্দির। বাংলা ১৩৫৩ বঙ্গাব্দে এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন তৎকালীন স্থানীয় জমিদার শেঠ মহানন্দ দাস। তিনি শিব ভক্ত ছিলেন তাই বাড়িতেই শিবমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। নিজেই সেই মন্দিরের সেবায়েত ছিলেন। আগামীতে মন্দিরের পুজো যেন বন্ধ না হয় তাই তিনি সেই সময়ই মহাদেব জিউ মন্দিরের নামে ৪০০ বিঘা জমির সম্পত্তি দান করে গিয়েছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার পর পরবর্তী প্রজন্ম বংশ পরস্পর সেবায়েতের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু পরিবারের কাউকে টাকা খরচ করতে হয় না এই মন্দিরের পুজো বা মন্দিরের সংস্কারের জন্য।
advertisement
মন্দিরের সম্পত্তি থেকেই উপার্জিত টাকায় পুজো হয়ে আসছে মন্দিরে। বর্তমান প্রজন্ম ধ্রুবকুমার দাস বলেন, ‘‘আমার ঠাকুরদা এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পরবর্তীতে বংশ পরম্পরায় পুজোর দায়িত্ব পালন করে আসছি আমরা। ঠাকুরদা মন্দিরের নামে ৪০০ বিঘা সম্পত্তি দিয়ে গিয়েছেন। সেই উপার্জিত টাকাতেই মন্দিরের পুজো মেলার আয়োজন করা হয়।’’
আরও পড়ুন : এই বিশেষ ফুল নিবেদন করলে প্রসন্ন হবেন মহাদেব, শিবরাত্রির আগে জানুন সে সম্বন্ধে
এমনকি এই মন্দিরে দান দক্ষিণাও তেমন নেওয়া হয় না। ভক্তরা খুব সামান্য কিছু এখানে দান করে থাকেন। সারা বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা এখানে আসেন। তবে শিবরাত্রির দিন কয়েক লক্ষ ভক্তের সমাগম হয় এই মন্দিরে। মানিকচকের গঙ্গা ঘাট থেকে জল নিয়ে এসে এই মন্দিরে ঢালেন ভক্তরা। প্রাচীন কাল থেকেই এই রীতি হয়ে আসছে। ক্রমশ ভক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে মন্দিরে। অনেকেই মনস্কামনা করেন মহাদেব জিউয়ের কাছে।
শিবরাত্রি উপলক্ষে পাঁচ দিনব্যাপী বিশাল মেলা বসে মন্দির প্রাঙ্গনে। দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসেন এই মেলায়। তবে নিয়মিত এই মন্দিরের পুজো হয়। তিন বেলা পুজো দেওয়া হয়। সকালবেলা বাল্যভোগ দেওয়া হয় মন্দিরে, দুপুরে অন্নভোগ আবার সন্ধ্যায় লুচি ভোগ দেওয়া হয় এই মন্দিরে। এই নিয়মেই পুজো হয়ে আসছে মালদহের শতাব্দী প্রাচীন অমৃতি শিব মন্দিরে। মন্দিরের পুরোহিত শান্ত বিলাস ওঝা বলেন, ‘‘শিবরাত্রি উপলক্ষে প্রচুর ভক্তের সমাগম হয় এই মন্দিরে। অনেকেই মনস্কামনা করেন। মনস্কামনা পূরণ হওয়ায় ভিড় আরও বাড়ছে। নিয়মিত এই মন্দিরের তিনবার পুজো হয়।’’
জমিদার বাড়ির পুজো হলেও বর্তমানে এই পুজোর খ্যাতি ছাড়িয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের। পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম পুজোর সমস্ত দায়িত্বভার পালন করে আসছেন।