এদিন বিধানসভাকক্ষে দাঁড়িয়ে ডিএ নিয়ে সেই বাম জমানাকেই নিশানা করেন মমতা। তাঁর দাবি, "সিপিএমের আমলে সব ডিএ পেন্ডিং ছিল। আমরা ডিএ দিচ্ছি৷ ৯৯%+৬% ডিএ দিয়েছি। আমি হয়ত অর্থনীতির বিশেষজ্ঞ নই৷ কিন্তু ৩%+৩% ডিএ ঘোষণা হল। এর পর আর কী চাই?"
আরও পড়ুন: সামনেই মন্ত্রিসভার বৈঠক, আবারও বাড়বে ডিএ? হাতে কত টাকা আসবে, হিসেবটা বুঝে নিন
advertisement
বকেয়া মহার্ঘ ভাতার দাবিতে আগামী ১০ মার্চ রাজ্যজুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের যৌথমঞ্চ। শহিদ মিনারের পাদদেশে ডিএ ইস্যুতে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। সোমবার হঠাৎই তাঁদের মঞ্চে হাজির হন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আশ্বাস দেন, ডিএ নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের আন্দলনকে নিঃশর্ত ভাবে সমর্থন করবে বিজেপি। ধর্মঘটকেও নৈতিক সমর্থন জানান এই বিজেপি নেতা।
এদিন বিধানসভার বক্তৃতায় ডিএ ইস্যুতে বিরোধীদের বিঁধতেও ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, "যখন কোনও পরিবার তৈরি হয়৷ তার সব দায়িত্ব দেখেই পরিকল্পনা করা হয়৷ কেন্দ্রের ও রাজ্যের কর্মীদের পে স্কেল আলাদা। সিপিএম বড় বড় কথা বলেছে। সাথে কংগ্রেস ও বিজেপি জুড়েছে৷ ওদের ধার করে যাওয়া ঋণ, শোধ করতে হয় আমাদের৷"
আরও পড়ুন: দারুণ খবর! ভারতের ৯ জায়গায় মিলল সোনার খনির খোঁজ, জেনে নিন কোথায় এই সুবর্ণ ভাণ্ডার..
এরপরেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাধিক সুবিধার কথা উঠে আসে মমতার কথায়। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ত্রিপুরা-উত্তরপ্রদেশের তুলনায় অনেক বেশি ছুটি এবং সুযোগ সুবিধা পান পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীরা। এখানে বছরে ৪০ দিন সবেতন ছুটি দেওয়া হয়। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের ছুটির সঙ্গেও এ রাজ্যের ছুটি কাঠামোর তুলনা টানেন মুখ্যমন্ত্রীয়। জানান, কেন্দ্রীয় সরকার এখন ২৫ ডিসেম্বরের ছুটি দেয় না, উল্টে পুজোতেও মাত্র একদিনই ছুটি থাকে। সেই তুলনায় রাজ্যের কর্মচারীরা অনেকটাই সুবিধা পান বলে দাবি তাঁর।
ডিএ নিয়ে বলতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন মমতা। ফের তোলেন বঞ্চনার অভিযোগ। বলেন, "একবার নিজেদের দিকে চেয়ে দেখুন। ভোট মিটলেই রেশন বন্ধ। এরপরেও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে চলেছে৷ ভোট মিটলেই গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দেয়। কেন্দ্রের কাছে আমাদের টাকা পাওনা আছে৷ যদিও সেই টাকা আমরা পাইনি। এরপরেও নবম শ্রেণিতে উঠলে সাইকেল দিই।"
চলতি অর্থবর্ষে সরকারি কর্মচারীদের এবং অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগীদের জন্য ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করেছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সরকার৷ কিন্তু সেই ঘোষণায় বিন্দুমাত্র সন্তুষ্ট হননি রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা৷ তাঁদের দাবি কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ডিএ দিতে হবে রাজ্য সরকারকে৷ বাড়তি ডিএ-র দাবিতে দুদিনের পেন ডাউন কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারী সরকারি কর্মচারীরা। এবার আগামী ১০ মার্চ রাজ্যজুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। তাতে সরকারি পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।