বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ইন্ডিয়া জোটের মঞ্চে একত্র হয়েছে বিরোধীরা। বিরোধী ভোট যাতে ভাগ না হয় তার জন্য একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দেওয়ার কৌশল নিয়েও চর্চা হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন রাজ্যে রাজনৈতিক সমীকরণ ভিন্ন। তাই সেই ভারসাম্যে পরিবর্তন হচ্ছে। যেমন এই রাজ্যে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিরোধী সিপিএম এবং কংগ্রেস। সিপিএম এবং কংগ্রেস তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইস্যুতে রাস্তায় নামে আন্দোলনের জন্য। আবার একই রকম ভাবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে এই দুই দল জোট করে অংশগ্রহণ করে।
advertisement
সেক্ষেত্রে, লোকসভা নির্বাচনে কী হবে তা নিয়ে চর্চা রাজনৈতিক মহলে। সিপিএমের তরফে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের সাথে কোনও সমঝোতা নয়। কিন্তু কংগ্রেসের সাথে জোট করাতে তাদের কোনও আপত্তি নেই। বরং কংগ্রেসের সাথে জোট না হলে লোকসভা নির্বাচনে পায়ের তলার জমি শক্ত হবে না। এমনটাই মনে করে সিপিএমের একটা বড় অংশ। সম্প্রতি সিপিএমের হাওড়া জেলা কমিটির দফতরে দলের বর্ধিত রাজ্য কমিটির বৈঠক বসেছিল। সেখানেই এই মত উঠে আসে নেতৃত্বের কথায়।
আরও পড়ুন: বার বার চেয়েও মিলছে শিক্ষক নিয়োগের ‘ফাইল’! সিবিআইয়ের বিস্ফোরক অভিযোগ, এবার কি আদালতে?
আর কয়েকমাস পরে লোকসভা নির্বাচন। সেই জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সিপিএম। বর্ধিত রাজ্য কমিটির বৈঠকে প্রশ্ন ওঠে রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে কোন আসনটি জেতার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারে দল। কোনও জেলার নেতাই এর সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। এর পরেই বেশ কয়েকটি জেলার নেতা বলেন একক ভাবে না হলেও যদি কংগ্রেসের সাথে জোট হয় তাহলে কয়েকটি আসনে সম্ভাবনা রয়েছে। এরাজ্যে কংগ্রেস ‘স্বাভাবিক জোটসঙ্গী’ এমনটা ধরে নিয়ে সেই প্রস্তুতিও চলেছে।
কিন্তু এরই মধ্যে জোট-প্রশ্নে ‘বিভ্রান্তি’ বাড়িয়েছে কংগ্রেস সাংসদ মালদহ দক্ষিণের কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরীর মন্তব্য। ডালু দাবি করেছেন, ‘‘মালদহ দক্ষিণ এবং বহরমপুর আসন আমাদের (কংগ্রেস) ছেড়ে দিয়েছেন বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন। তবে আমাদের আরও কিছু দাবি রয়েছে। সেগুলি নিয়ে আলোচনা চলছে।’’
আরও পড়ুন: শীতে কোষ্ঠকাঠিন্যে কষ্ট পাচ্ছেন! একবার খেয়ে দেখুন এই পাতা…কাজ হবে ম্যাজিকের মতো
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বুধবার থেকে সিপিএমের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি ও জানুয়ারিতে ব্রিগেডে যুব সমাবেশের কথা মাথায় রেখে। সূত্রের খবর, বৈঠকের শুরুতেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম কংগ্রেসকে নিয়ে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন।
বৈঠকে প্রারম্ভিক ভাষণে তিনি বলেছেন, রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলাই সিপিএমের রাজনৈতিক লাইন। তাঁরা অবশ্যই কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা চান। কিন্তু কংগ্রেসকে ঠিক করতে হবে, তারা কী চায়। সেই সঙ্গেই সেলিম পরিষ্কার করে দিয়েছেন, কংগ্রেস যদি কোনও ভাবে তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা করে আবার অন্য দিকে বামেদেরও সঙ্গে চায়, সেই পথে তাঁরা যাবেন না।
কোনও ভাবেই তৃণমূলের সঙ্গে কোনও ‘সংস্রব’ চলবে না বলে বুঝিয়ে দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। অন্যদিকে বৈঠকের শেষ দিনে রাজ্য নেতৃত্ব জেলা নেতৃত্বকে বার্তা দিয়েছেন জোট নিয়ে কী হয় তা ভবিষ্যতে দেখা যাবে তার আগে নিজেদের সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে। বুথ কমিটি তৈরি করতে হবে। প্রচারে জোর দিতে হবে। এবং নিজেদের পায়ের তলার জমি নিজেদেরকেই শক্ত করতে হবে।