আর সেই সাক্ষাতের পর পরই বিকেলেই রাজভবনের পক্ষ থেকে রাজ্যপালের কড়া বিবৃতি আসার পর রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। সাম্প্রতিক সময় গত দু’মাসের মধ্যে রাজ্যপালের পক্ষ থেকে এরকম বিবৃতি কার্যত শুনতে পাওয়া যায়নি। আর শনিবার বিকেলেই বিবৃতি দিয়ে স্পষ্ট ভাবে জানানো হল, দুর্নীতি বন্ধে রাজ্যপাল ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময় শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বৈঠক করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে। যার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং ১০০দিনের গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্প নিয়ে ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন রাজ্যপালের কাছে।
advertisement
আরও পড়ুন: মাটির তলা দিয়েই কাজ হাসিল, মিটারেও বাড়ছে না মাশুল! অভিযানে গিয়ে অবাক কর্তারা
আরও পড়ুন: চাকরি ছেড়ে একাই পরীক্ষার প্রস্তুতি, প্রথম বার টেট দিয়েই রাজ্যে প্রথম বর্ধমানের ইনা
এ দিন রাজভবনের পক্ষ থেকে জারি করা বিবৃতিতে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন, সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। আর তার মধ্যেই রাজ্যপালের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে দুর্নীতি বন্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, আইনকে কারওর হাতে তুলে নিতে অনুমতিও দেওয়া যাবে না সে কথাও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল।
রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন দোরগোড়ায়। আর এই পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখেই বিরোধীদল রাজ্যপালের কাছে এ দিন ফের অভিযোগ জানিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা হতে পারে এমন আশঙ্কার কথাও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন এদিন রাজ্যপালকে। রাজভবনের তরফে এমনটা বিবৃতি জারি করার পাশাপাশি রাজ্যপাল এমনটাও জানান, "হিংসার কোনও জায়গা নেই নির্বাচনে।" শান্তিপূর্ণ এবং নির্বিঘ্নেই পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। আইনশৃঙ্খলা ও বজায় রাখা হবে এবং যেখানে যেখানে প্রয়োজন হবে সেখানে হস্তক্ষেপ করা হবে।" রাজভবনের পক্ষ থেকে শনিবার বিকেলে এই বিবৃতি জারি করার পর রাজনৈতিক মহলেও বিতর্ক শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
শনিবারের বিকেলের এই বিবৃতির পর রাজ্যপাল পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে যে যথেষ্ট কড়া মনোভাব নিতে চলেছে আইনশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে এমনটাই মনে করা হচ্ছে। তবে শুধু পঞ্চায়েত নির্বাচন বা দুর্নীতি নয়, রাজভবনের তরফে এদিন জারি করা বিবৃতিতে আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে রাজ্যপাল যে কাজ চালিয়ে যাবেন এমনটা সিদ্ধান্তের কথাও এদিনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। যদিও সম্প্রতি রাজ্যের দুই বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আচার্য হিসেবে রাজ্যপাল কেই উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগ নিয়েও সুপ্রিম কোর্টের আইনকেই এদিন হাতিয়ার করেছেন রাজ্যপাল। সব মিলিয়ে এদিনের রাজ্যপালের বিবৃতির পর ফের রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ল।
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়