একগুচ্ছ কর্মসূচি গৃহীত। বিজেপি সূত্রের খবর, ১০০ দিন ‘নো লিভ পলিসি’ বিজেপির। আত্মতুষ্টিতে ভুগলে হবে না। টানা ১০০ দিন সব ‘ছুটি’ বাতিল সব পদাধিকারীদের। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঠেকাতে দলীয় শৃঙ্খলায় জোর। আদি নব্য দ্বন্দ্ব বরদাস্ত নয়। দলীয় অনুশাসন মেনে সমন্বয় রেখে কাজ করার বার্তা। অনুপম হাজরার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে অনুপম হাজরা ছাড়াও বিভিন্ন দলীয় নেতৃত্বের আচরণে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে রাজ্য বিজেপিকে। এবার তাই দলীয় অনুশাসনেই জোর দিচ্ছে পদ্ম শিবির।
advertisement
আরও পড়ুন– 6174 কেন ম্যাজিক্যাল সংখ্যা? কে তা আবিষ্কার করেছেন? খুব কম সংখ্যক মানুষই এই বিষয়ে জানেন
সূত্রের খবর, বুধবার রাজ্য কমিটির বৈঠকে বক্তব্য রাখার সময় বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘‘নিজেদের মধ্যে ‘ল্যাং মারামারি’ বন্ধ করুন। দলের উপর দিকে কেউ উঠলে তাকে টেনে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা অনেক সময় হচ্ছে। এটা বন্ধ করুন। না হলে দলেরই ক্ষতি হবে।’’
নড়বড়ে সংগঠন মোকাবিলায় সংগঠন মজবুত করতে বুথ সশক্তিকরণে জোর। লোকসভা ভোটকে মাথায় রেখে চারটে ক্যাটাগরি ভাগ করে প্রচার ও জনসংযোগ করার নির্দেশ। চার ভাগে বিভক্ত ক্যাটাগরি হল, মহিলা, পুরুষ, গরিব এবং কৃষক। তিন কোটি মহিলা ভোটারের কাছে পৌঁছতে হবে। প্রত্যেক ক্যাটাগরির সম্প্রদায়ের কাছে রাজনৈতিক প্রচার, শাসক দল তথা সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বেনিয়মের কথা বলার পাশাপাশি লোকসভা কেন্দ্রওয়ারি স্থানীয় ইসুকে হাতিয়ার করতে হবে।
আরও পড়ুন– একটা ঘোড়ার লেজ নেই, খুঁজে দিতে পারবেন তাকে বাকি ঘোড়ার ভিড়ে ৫ সেকেন্ডের মধ্যে?
বিজেপির মহিলা, যুব, কৃষক-সহ সমস্ত মোর্চার নেতৃত্বকে নিয়ে যৌথ কনভেনশন করা হবে আগামী ৩ জানুয়ারি। যার প্রস্তুতি বৈঠক হবে চলতি মাসের ৩০ তারিখ। আগামী ৩ থেকে ২৪ জানুয়ারি ‘বিকশিত ভারত সভা’ রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে করা হবে। জনসংযোগের লক্ষ্যে ধাপে ধাপে প্রতিটি গ্রামে ‘চলো গ্রামে যাই’ কর্মসূচি পালন করবে বঙ্গ পদ্ম শিবির। রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক পরিকাঠামোতেও বেশ কিছু বদল হানা হচ্ছে। লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে সংগঠনের জেলা ইনচার্জ এবং লোকসভা ইনচার্জ একজন পদাধিকারীকেই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় প্রকল্পের প্রচার থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের যারা উপভোক্তা , আবাস সহ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুযোগ যারা পেয়েছে তাদের কথা লোকসভা কেন্দ্র ধরে ধরে জনসমক্ষে তুলে ধরতে হবে।
১০০ দিনের যে রোডম্যাপ চূড়ান্ত হয়েছে সেখানে বিজেপির যে ৪৩ টি সাংগঠনিক জেলা রয়েছে সেই জোন ধরে ধরে প্রচার, জনসংযোগ, বুথ সশক্তিকরণ, সভা, মিছিল সহ অন্যান্য রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচি পালন করতে হবে। লোকসভা ভোটকে বাংলাকে বিশেষ গুরুত্ব গেরুয়া শিবিরের। অমিত শাহ জেপি নাড্ডা কলকাতা ছাড়তেই তড়িঘড়ি রাজ্য কমিটির বৈঠক। সেই বৈঠক শেষ হতে না হতেই বুধবার রাতেই বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ কলকাতা এসে সুকান্ত মজুমদার শুভেন্দু অধিকারী শহর রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে গভীর রাত পর্যন্ত রুদ্ধদ্বার সাংগঠনিক বৈঠক করেন।
আজ, বৃহস্পতিবার সকালেও সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে একপ্রস্থ সাংগঠনিক বৈঠক করেন সন্তোষ। দলীয় শৃঙ্খলা ভাঙার কারণে শাহী নির্দেশে অনুপম হাজরাকে কেন্দ্রীয় সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনুপমের জায়গায় বাংলা থেকে কে ওই দায়িত্বে? জল্পনা তৈরি হয়েছে। তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রের খবর। তবে ‘‘কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকা নয়, সংগঠনকে শক্তিশালী করতেই হবে।’’ দলীয় বৈঠকে এই বার্তাই দেওয়া হয়েছে।