বৈঠকের শুরুতেই চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার বলেন, "তৃতীয় ঢেউয়ে আমরা প্রবেশ করে গিয়েছি। যখন দক্ষিণ আফ্রিকায় নতুন করে করোনা ছড়াতে শুরু করে, সেই সময়ে মাত্র ৭ দিনে সংক্রমণ বেড়েছিল ১০০ শতাংশ। তাই আমাদের সতর্ক হতে হবে। মাস্ক ছাড়া আমাদের চলবে না। এটা ভাবার কারণ নেই যে, কারওর এক বার হয়ে গিয়েছে বলে আর করোনা হবে না। দু'বার হলেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। প্যারাসিটামল হল আসল ওষুধ। শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে শরীর অনুযায়ী বিশেষ ওষুধ খেতে হবে। তবে পাঁচ-সাত দিনে সকলেই সুস্থ হয়ে উঠছেন, এটা ভাল লক্ষণ।
advertisement
আরও পড়ুন - সপ্তাহান্তে কার্ফু দিল্লিতে, দেশের রাজধানীতে করোনা সংক্রমণ লাগামছাড়া!
চিকিৎসক কুণাল সরকার এই একই সাংবাদিক বৈঠক থেকে গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে রাজ্য সরকারকে ভেবে দেখতে বলেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, "হাসপাতালে যা বেড আছে তার উপর আবার চাপ আস্তে চলেছে। মানুষ যদি সচেতন হন, তা হলে সেই চাপ এড়ান যেতে পারে। তাই আমরা যদি ভিড় এড়িয়ে চলি, আমাদের তা হলে বিপদের মুখে পড়তে হবে না। দক্ষিণ আফ্রিকার থেকে অনেক আগেই আমাদের দেশ কোভিড মুক্ত হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গে এখনও কোভিডএর বেড পর্যাপ্ত আছে। কিন্তু কত দিন থাকবে, তা নির্ভর করছে সাধারণ মানুষের উপর। রোগীদের ক্ষেত্রে ঝুঁকির অবস্থা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে ডাক্তারদের। তবে কত দিন আইসোলেশনে থাকতে হবে, তা নিয়ে মতভেদ আছে। এক এক জায়গায়, এক এক রকম দিনসংখ্যা বলা আছে। চিকিৎসকরা পরিস্থিতি বুঝে সেই মত দিনসংখ্যা বলে দেবেন।"
আরও পড়ুন - ১১৭ দিনে সর্বোচ্চ করোনা আক্রান্ত দেশে! লাফিয়ে সংক্রমণ বাড়ছে মহারাষ্ট্রে
চিকিৎসক যোগীরাজ রায় উৎসবে মেতে ওঠার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, "দুর্গাপুজো, কালীপুজো দেখেছি, তখনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল। হঠাৎ সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ল। তার মানে ভাইরাস চরিত্র পাল্টেছে। তার সঙ্গে আমাদের উন্মাদনায় মেতে ওঠাও এক সঙ্গে কাজ করেছে। অনেকে টিকা নেননি। তাদের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে। তাঁদের অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা পড়তে পারে। এখনও ভাইরাসের চারিত্রিক বদল নিয়ে গবেষণা চলছে।" শেষে চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, "তৃতীয় ঢেউ এসেছে, আমরা খুব প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। আগামী দু'সপ্তাহে স্পষ্ট হবে পুরোটা। টিকার কারণে ও ওমিক্রনের কারণে গুরুতর অসুস্থতা অনেকের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে না, যা ভাল লক্ষণ। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ওমিক্রনের সংক্রমণ ক্ষমতা এতটাই বেশি যে এটি ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিপুল সংখ্যায় মানুষ যদি আক্রান্ত হন, তাহলে গুরুতর অসুস্থতাও সামান্য বাড়বে। তবে আতঙ্ক করা যাবে না। পাশাপাশি সতর্ক থাকতে হবে, হুল্লোড়ে মেতে উঠলে চলবে না। আর অনেকের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে, অ্যান্টিবডি ককটেলের প্রতি একটা ঝোঁক তৈরি হয়েছে। তবে অ্যান্টিবডি ককটেলের জন্য সকলের রোগ সেরে যাবে, এমনটা ভাবলে ভুল ভাবা হবে।
Sanhyik Ghosh