পুলিশে খবর দিয়ে রীতিমতো পোস্টার কাউন্সিলরের। হসপিটালের জমিতে হোক উন্নয়নমূলক কাজ, দাবি পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলরের। এদিকে আশ্বাস মেয়র ফিরহাদ হাকিমের।
১৯৯৬ সালে তৎকালীন মেয়র প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে শুরু হয়েছিল গড়ফা সহায়ক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের যাত্রা। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রায় ১৪ কাঠা জমির উপর তৈরি হয় এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
আরও পড়ুন- জাদুঘর গুলিকাণ্ডে CISF জওয়ানের ১৪ দিনের জেল হেফাজত! আজও সওয়াল করলেন না কেউ
advertisement
টিবি রোগ সহ প্রাথমিক চিকিৎসা হলেও সেই হাসপাতালের এখন ভগ্নদশা। হাসপাতাল বাড়ির একাংশ যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীদের জন্য একসময় যে কোয়ার্টার ছিল, তা প্রায় ভুতুড়ে বাড়ি।
এলাকা জুড়ে আগাছা আর জঙ্গল। সন্ধের পর সেখানেই বসে মদ, গাঁজার আসর। স্থানীয় বাসিন্দারা তো বটেই, খোদ পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর নিজেই পুরসভার মাসিক অধিবেশনে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ তোলেন।
পরিস্থিতি এতটাই হাতের বাইরে চলে গেছে যে কাউন্সিলার রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন করছেন, যাতে ওই এলাকায় কেউ নেশা করলেই পুলিশকে ১০০ ডায়াল করে খবর দেওয়া হয়।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের এই পরিত্যক্ত জমিতে উন্নয়নমূলক কাজের প্রস্তাব রাখেন কলকাতা পুরসভার ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরিজিৎ দাস ঠাকুর।
আগাছার জল জঙ্গলে মশা মাছির উপদ্রব আর অন্যদিকে সন্ধে হলেই নেশাভাঙ সহ অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে মুক্তি চাইছেন এলাকার বাসিন্দারাও।
এলাকার বাসিন্দা তুহিন মুখোপাধ্যায় বলেন, এত জল জঙ্গল হয়েছে যাতে মশা মাছির উপদ্রব বাড়ে। পুরসভা মাঝে মাঝে পরিষ্কার করায় কিছুটা স্বস্তি মেলে। তবে সন্ধ্যের পর বাইরে থেকে অনেকেই এসে নেশা করে।
জমির পরিমাণ ১৩.৮২ কাটা। একটি বড় মাপের পুকুর এবং তিনটি ভগ্নদশা বাড়ি রয়েছে। যার মধ্যে একটিতে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আউটডোর চলে। বর্তমানে টিভি রোগের আউটডোর চিকিৎসা মূলত করা হয়। এছাড়াও প্রাথমিক আউটডোর চিকিৎসা। এলাকায় জল কষ্ট রয়েছে। তাই বুস্টার পাম্পিং স্টেশন সহ জলাধার নির্মাণের প্রস্তাব।
আরও পড়ুন- Dilip Ghosh: ইডি কেন রাজ্যে? CBI তদন্তে সর্ষের মধ্যে 'ভূত' পাচ্ছেন খোদ দিলীপ, দিলেন 'সেটিং' তত্ত্ব!
একটি স্যাটেলাইট স্বাস্থ্য কেন্দ্র পুরসভার অধীনে তৈরির প্রস্তাব।পরিত্যাক্ত জমিতে দশ দিগন্ত কমিউনিটি হল তৈরির প্রস্তাব। জলাশয়ের পাড় বাঁধিয়ে ঘাট তৈরি এবং সৌন্দর্যায়ন করা। এই জলাশয় কে স্থানীয় বাসিন্দারা ছট পুজোর কাজে ব্যবহার করে থাকেন।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে ওই জমিতে উন্নয়নমূলক কাজের প্রস্তাব হিসেবে জলাধার এবং স্যাটেলাইট মেডিকেল সেন্টার করার পুরসভার আশ্বাসের কথা শোনান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। অধিবেশনে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতীন ঘোষের সঙ্গে কথা হয়েছে।
রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে উন্নয়নের কাজ করা হবে।২১৮০ নম্বর দাগের এই জমির বর্তমান মালিক পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। আপাতত একটি পুকুর ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভগ্নদশা বাড়িসহ পরিত্যক্ত জমি রয়েছে।
ইতিমধ্যেই রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর ও কলকাতা পুরসভার আধিকারিকেরা জমিটি পরিদর্শন করেছেন। জমি হস্তান্তরের আবেদন কলকাতা পুরসভা রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে পাঠিয়েছে। আইনি জটিলতা কেটে গেলেই উন্নয়নের কাজ হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর।