আদালতে জীবনকৃষ্ণের আইনজীবী জানিয়েছেন, ‘‘অপরাধ এক, গ্রেফতার দুবার! কেন এমন? নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই গ্রেফতার করেছিল। সুপ্রিম কোর্ট থেকে ওই মামলায় জামিন পেয়েছেন। ২০২২ সালে ইসিআইআর করে ইডি, এতদিন পর গ্রেফতার করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের জামিনের শর্ত লঙ্ঘন করেননি। একই মামলায় দুবার গ্রেফতার কেন করা হল? তদন্তে সহযোগিতা করেছেন । যে কোনও শর্তে জামিন মঞ্জুর করুক আদালত।’’
advertisement
অন্যদিকে ইডির আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘জামিনের বিরোধিতা করা হচ্ছে। দুটো আলাদা তদন্তকারী সংস্থা। দুটো মামলা আলাদা। ইডি ও সিবিআই দুটো পৃথক এজেন্সি। আমাদের তদন্তে শ্বশুরবাড়ির সদস্য, স্ত্রী ও অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রা ইন্টার কানেক্টেড( অভ্যন্তরীন সম্পর্ক খুব ভাল) এবং ইন্টার ট্রানসাকশন অর্থাৎ একে অপরের সাথে আর্থিক লেনদেনের তথ্য প্রমাণ রয়েছে।’’
অভিযুক্ত বিধায়কের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়ার দাবি তুলে ইডির আইনজীবী আদালতকে জানান, ‘‘৪৬ লক্ষ টাকা পরিবারের সদস্যের অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে । যিনি সরকারি চাকরি করেন, তাঁর অ্যাকাউন্টে হঠাৎ এত পরিমাণ টাকা জমা পড়েছে এবং তার সঠিক তথ্য দিতে পারেননি। চাকরিপ্রার্থীদের বয়ানের আছে কীভাবে নগদে ও ব্যাঙ্কের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হয়েছে জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। এডুকেশন স্ট্রাকচার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এটা বুঝতে হবে । তাই জামিন দেওয়ার বিরোধিতা করা হচ্ছে।’’
অন্যদিকে তাঁর সম্পর্কে ওঠা সমস্ত অভিযোগকে অস্বীকার করেছেন জীবনকৃষ্ণ। এদিন তিনি জানিয়েছেন, ‘‘সত্যি সামনে আসবেই। কোনও অভিযোগ প্রমাণ করা যাবে না, কারণ সব অভিযোগই মিথ্যা। আমি একটি ছোট, গ্রামীণ ও প্রান্তিক এলাকার বিধায়ক, তফসিলি জাতিভুক্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছি। আমার মোবাইলে কোনও অসঙ্গতি নেই। মোবাইল ফেলে দেওয়ার কোনও ঘটনা ঘটেনি। আমি সঙ্গে সঙ্গেই মোবাইলটি ইডি-র হাতে তুলে দিই। পালানোর চেষ্টা করিনি, যে পুকুরের কথা বলা হচ্ছে তা আমার বাড়ির ভেতরেই। আমি তখন সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলাম।”
তিনি আরও দাবি করেন, “আমার বাবা হয়তো ভয়ে কিছু বলেছেন, কিন্তু তিনি আমার বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারেন না। আমি বাবার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। আমি কারও নামে কোনও সম্পত্তি কিনিনি। যদি সম্ভব হয়, তদন্ত করে প্রমাণ করুন।” ইডি সূত্রে খবর, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে গতকালই জীবান কৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আজ তাঁকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁর আইনজীবীর যুক্তি ও ইডি-র দাবি শোনেন। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী দিনে হবে।