রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ২০২০-র ডিসেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। বুধবার ঝাড়গ্রামের সভায় দাঁড়িয়ে ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল নিয়ে তিনি বিস্ফোরক দাবি করেন। শুভেন্দুর দাবি ঘিরেই রাজ্য রাজনীতি এখন উত্তাল। একই সভামঞ্চে শুভেন্দু এও বলেছিলেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলাম। আমি জানি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাত দু’টো পর্যন্ত নবান্ন থেকে আমাকেই বলেছিলেন, ঝাড়গ্রাম আর পুরুলিয়াটা হাতের বাইরে চলে গিয়েছিল। ডিএম-এসপিকে দিয়ে পাল্টে দিয়েছি। তাই ভোট লুঠ করে, গণনা কেন্দ্রে ফলাফল বদলে, আপনাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে পদ্মের জেলা পরিষদকে সেদিন জোড়াফুলের জেলা পরিষদ করে দেওয়া হয়েছিল।’’
advertisement
আরও পড়ুন- গঙ্গাসাগর মেলায় অসুস্থদের সাহায্য করতে প্রস্তুত হেলিকপ্টার
কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে শুভেন্দু অধিকারী বললেন, ‘‘এবার আর ওসব চলবে না, প্রতিরোধ হবে।’’ শুভেন্দু অধিকারীর এই দাবির পাশে থেকে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘ঠিকই বলেছেন। তখন সরকারে ছিলেন। কী হয়েছিল উনিই ভাল জানবেন। আবার চেষ্টা হলে আমরা প্রতিরোধ করব।’’ শাসক শিবিরের তরফে তৃণমূল নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘শুভেন্দু মিথ্যা বলছেন। সত্যি হলে উনি আগে বলেলনি কেন? তাহলে কি উনি ওভাবেই ভোটে জেতেন? পঞ্চায়েত ভোটে ঝারগ্রাম আর পুরুলিয়ার ফলাফল পাল্টে দেওয়া প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর বিস্ফোরক অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের গলাতেও একই সুর। শুধুমাত্র পুরুলিয়া কিম্বা ঝাড়গ্রামই নয়, মুখ্যমন্ত্রী এরকম অনেক পঞ্চায়েতেই ভোটের ফলই পাল্টে দিয়েছেন। মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে নেই। পুলিশ- প্রশাসনকে দিয়ে এবারে ওরকম কিছু করতে গেলে আমরা ছেড়ে কথা বলব না।’’
২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যজুড়ে অশান্তির অভিযোগ করে বিরোধীরা। এই ভোটে ঝাড়গ্রাম এবং পুরুলিয়া দুই জেলাতেই বিপুল জয় পায় তৃণমূল। পুরুলিয়া জেলা পরিষদের ৩৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পায় ২৬টি।বিজেপি ৯, কংগ্রেস ৩ ৷ ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের ১৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জেতে ১৩টি-তে। বাকি ৩টি-তে বিজেপি। সেই জেলায় ২০১৮ সালে শাসক দলের জয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে শুভেন্দু অধিকারীর চাঞ্চল্যকর দাবি ঘিরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।