বাস সংগঠনের প্রতিনিধি টিটো সাহার কথায়, "সরকার যে বাস বেসরকারি বাস মালিকদের হাতে তুলে দিতে চায় তাতে জ্বালানির খরচ ও ব্যবহার অনেকটাই বেশি। ফলে ভাড়ার অঙ্ক না বাড়ালে বাস মালিকদের পক্ষে সেই খরচ বহন করা সম্ভব নয়।"
আরও পড়ুন: কৃষ্ণনগরে আজ জনসভা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, সভা ঘিরে নজর রাজনৈতিক মহলের
advertisement
তাঁদের যুক্তি, বাস যাত্রীদের অধিকাংশই প্রথম ধাপের মধ্যেই ঘোরাফেরা করেন। ফলে এই বিষয়ে রাজ্য যথাযথ ভাবে নজর দিক।
এর আগে বাম আমলে পিপিপি মডেলে দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ নিগম, কলকাতা স্টেট ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন, ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের কিছু বাস ফ্র্যাঞ্চাইজির মাধ্যমে চালানো হয়েছিল। কিন্তু তাতে সাফল্যের মুখ দেখেনি পরিবহণ দফতর। পরবর্তী সময়ে সেই বাস মুখ থুবড়ে পড়ে। আজও শহরের ইতিউতি সেই বাস পড়ে আছে।
আপাতত ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের পড়ে থাকা বাসগুলিকেই বেসরকারি বাস মালিকদের হাতে তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। দফতরের লক্ষ্য, প্রথম পর্যায়ে ১০০টি বাস বেসরকারিকরণ করে চালানো হবে। তার পরে আরও ১২০টি বাসকে এ ভাবে রাস্তায় নামানো হবে। পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, এই ভাবে ধাপে ধাপে ৪০০টি সরকারি বাসকে বেসরকারি বাস মালিকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
সরকারি ডিপোয় পড়ে থাকা বাসগুলি ফের রাস্তায় নামাতে প্রাথমিক ভাবে বেসরকারি বাস মালিকদের তরফে রাজ্যকে কয়েকটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, গাড়িগুলি ইউরো-চার পর্যায়ের হতে হবে। দ্বিতীয় যে রুটে ওই বাস চলবে, সেই পথে সরকারি বাস চলতে পারবে না। তৃতীয়ত, ভাড়া বাবদ নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ মাসিক ভাবে পরিবহণ দফতরের হাতে তুলে দিতে হবে। চতুর্থত, বেসরকারি চালক ও কন্ডাক্টররা বাসের পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। পঞ্চমত, মেরামতি, গাড়ির যাবতীয় কাগজপত্র নবীকরণ ও ড্রাইভার-কন্ডাক্টরদের বেতন প্রদান করবে বেসরকারি পক্ষ। এছাড়াও আরও বেশ কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সিটি সাবারবান বাস সার্ভিসেসের সাধারণ সম্পাদক টিটো সাহা বলেছেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে আমাদের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে পরিবহণ দফতর। আমরাও পাল্টা কিছু শর্ত দিয়েছি। দফতর আলোচনা করে জানাক। তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’’
সূত্রের খবর, আপাতত শহরে ৮টা রুট ঠিক হয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিতে বাস চালানো জন্য। তাছাড়া কিছু আছে দূরপাল্লার রুট। তবে এই বাস নামানো নিয়ে বাসমালিক সংগঠনগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়েছে। জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা সংগঠনগত এই বাস নামানোর বিষয়ে কোনও সদস্যকে বলছি না। কারণ আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা ভাল না। সরকারের সঙ্গে চুক্তিতে বাস নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন মালিকরা।’’