উত্তর দিনাজপুর ইটাহার এলাকার ডাংগি হাটগাছি গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল আলির দু বছরের শিশুপুত্র মোস্তাকিম আলি। গতকাল সকালে হঠাৎ করেই খেলতে খেলতে তীব্র শ্বাসকষ্ট ও বমি শুরু হয় তার। কিছু না বুঝতে পেরে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে, সেখান থেকে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ পরে সেখান থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে যায় শিশুর পরিবার।
advertisement
এক্স-রে করলে দেখা যায় শ্বাসনালীর ডান দিকে একটি পেরেক আটকে আছে।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে শিশুটিকে তড়িঘড়ি রেফার করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। শনিবার বিকেলে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে বেরিয়ে ভোররাতে এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছায় শিশুর পরিবার।
রবিবার সকালে শুরু হয় যুদ্ধ। এসএসকেএম হাসপাতালে ইএনটি বিশেষজ্ঞ অরুনাভ সেনগুপ্তের নেতৃত্বে চার সদস্যের চিকিৎসক দল দু'ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচার করে ব্রঙ্কোসকপির মাধ্যমে পেরেকটিকে শিশুটির গলা থেকে বের করতে সক্ষম হয়।
পেরেকটি বেরিয়ে আসার পর চিকিৎসকদের চক্ষু চড়কগাছ! প্রায় আড়াই ইঞ্চি লম্বা পেরেকটি কিছুটা বাঁকা অবস্থায় ছিল। এক কথায় বললে জীবন-মরণ সংকট ছিল শিশুটির। তবে আপাতত সে বিপন্মুক্ত। যদিও অস্ত্রোপচারের পর আরও পর্যবেক্ষণের জন্য শিশুকে পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
ইএনটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অরুনাভ সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, বেশ কিছুক্ষণ দেরি হয়ে গিয়েছিল তবুও আমরা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলাম। প্রায় আড়াই ইঞ্চি পেরেক যেভাবে গেঁথে গিয়েছিল শিশুটির শ্বাসনালী চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারত এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারত। সফল অস্ত্রোপচার আমাদেরকে খুবই তৃপ্তি দিয়েছে। শিশুটিকে জীবন বাঁচিয়ে আমাদের আনন্দ হচ্ছে।
অন্য দিকে শিশুর বাবা শফিকুল আলি জানিয়েছেন, যেভাবে মুস্তাকিমের শরীর নিস্তেজ হয়ে গিয়েছিল আমরা সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। আল্লার কৃপায় রক্ষা পেয়েছি। এই ডাক্তারবাবুরাই আমাদের কাছে আল্লার অন্য রূপ।
