১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই যুব কংগ্রেসের ডাকে মহাকরণ অভিযান হয়েছিল। সেই অভিযানে উত্তর কলকাতার হাতিবাগান এলাকা থেকে মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন বন্দন। উত্তর কলকাতায় অতীন ঘোষের নেতৃত্বে যে সমস্ত যুব কংগ্রেস কর্মীরা গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন বন্দন দাস।
আরও পড়ুন- উত্তরবঙ্গ থেকে সাইকেল চালিয়ে ২১-এর সমাবেশে, সম্মান অভিভূত অভিষেকের
advertisement
মিছিল ব্রাবোর্ন রোডের দিকে যেতেই শুরু হয় হাঙ্গামা। আচমকা পুলিশের গুলি। তরতাজা যুবক বন্দন সেদিন লুটিয়ে পড়েছিলেন পুলিশের গুলিতে। সহকর্মীরা প্রাণ বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেন। শত চেষ্টার পরও শেষমেষ তাঁকে বাঁচানো যায়নি।
১৯৯৩ সালে যুব কংগ্রেস। এরপর ১৯৯৮ নতুন দল তৃণমূল কংগ্রেস। মহাকরণ অভিযানে সেদিনের যুব কংগ্রেসের আন্দোলনে শহীদদের পরবর্তী সময়েও পাশে থেকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শহীদ পরিবারদের আর্থিক সহায়তা করেছেন তিনি। প্রতি বছর এই দিনটি গুরুত্বের সঙ্গে পালন করে তৃণমূল কংগ্রেস।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেল মন্ত্রী থাকাকালীন প্রয়াত বন্দন দাসের ছোট ভাই অনুপ রবিদাসকে রেলে চাকরি করে দেন। প্রতি বছরের মতো এদিনের সমাবেশে বহু মানুষ এসে জড়ো হন।
হাজার হাজার কর্মীদের মতো ধর্মতলার শহীদ সমাবেশ মঞ্চে হাজির থাকেন শহীদ পরিবাররা। তাই এবারেও ২১-র সমাবেশে হাজির থাকতে কলকাতায় ইতিমধ্যেই এসে পৌঁছেছেন বন্দন দাসের মা ধাত্রী দেবী।
তিনি শারীরিক ভাবে অসুস্থ। তাই কথা বলার অবস্থায় নেই। তবে ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যুর স্মৃতি আজও তাঁর কাছে বেদনাদায়ক। ছেলের সেই স্মৃতিকে বুকে নিয়েই প্রতি বছর এই বয়সেও শারীরিক ধকল সহ্য করে ভিন রাজ্য থেকে কলকাতায় আসেন।
সেদিনের ঘটনা চাক্ষুস করেছিলেন বন্দনের বন্ধুরা। সেদিন তাঁর প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। অতীন ঘোষ বর্তমানে রাজ্য বিধানসভার বিধায়ক এবং কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র।
আরও পড়ুন- সমাবেশ ঘিরে বেনজির নিরাপত্তা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তায় আলাদা গেট
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গী অতীন ঘোষ সেদিন ছিলেন যুব নেতা। বন্ধনকে খুব কাছ থেকে দেখে তাঁকে সেদিন তড়িঘড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন মেডিকেল কলেজে। রক্ত ছিল না বলে সেদিন মেডিকেল কলেজের আধিকারিকসহ সকলের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে ভিভিআইপিদের জন্য রাখা রক্ত দিয়েছিলেন বন্দন দাসকে। তবু শেষ রক্ষা করা যায়নি। সেই আক্ষেপ এখনও রয়ে গিয়েছে উত্তর কলকাতার যুব কংগ্রেস নেতাকর্মীদের মনে।