নেতৃত্ব জানিয়েছে, এই কর্মসূচির জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়নি। জানানো হয়েছিলো মাত্র। এতদূর পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। তবে কর্মসূচির আগের দিন থেকেই সবকিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার পুলিশের তরফে অনুমতি না থাকার কথা জানিয়ে দেওয়া হয় নেতৃত্বের কাছে। বলা হয় যে কোনও রকমের অভিযান করা যাবে না। যদিও করলে কতটা অবধি করা যাবে? কোন রুট থেকে মিছিল যেতে পারে। তা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে দরকষাকষিও চলে।
advertisement
পুলিশের অনুমতি না থাকলেও কর্মসূচি করতে অনড় থাকে ছাত্র সংগঠনের নেতারা। অভিযান আটকাতে সকাল থেকেই স্টেশনে পুলিশ মোতায়ন করা হয়। বেশ কিছু প্রিজন ভ্যানও নিয়ে আসা হয়। মিছিল বেরোনোর সময়েই আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করে শুরুতেই অভিযান শেষ করে দেওয়ার কৌশল নেয় পুলিশ। পুলিশের কৌশল বুঝতে পেরে 'প্ল্যান বি' ফর্মুলা গ্রহণ করে এসএফআই নেতৃত্ব। স্টেশনে থাকা আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন প্লাটফর্মে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এর পর স্টেশনের বাইতে কয়েকজন নেতা কর্মীকে টোপ হিসেবে রাখা হয়।
এখানেই শিয়ালদহে গ্রেফতার হন এসএফআইয়ের কলকাতা জেলা সভাপতি দেবাঞ্জন দে ও সম্পাদক মহম্মদ আতিফ, হাওড়ায় দীপ্সিতা ধর। পুলিশের কড়াকড়ি দেখে স্টেশনের বাইরে থেকে মিছিল শুরু হবে, সংগঠনের তরফে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা হয়। এই টোপেই স্টেশনের ভিতরে থাকা পুলিশ কর্মীদের বাইরে জমায়েত করা হয়। স্টেশন চত্বরে থাকা পুলিশ অনেকটাই পাতলা হয়ে যায় এই সুযোগে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আন্দোলনকারীরা এক জায়গায় জমায়েত হয়। হাওড়ায় সংগঠনের নেতৃত্বে ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস এবং শিয়ালদায় ছিলেন রাজ্য সভাপতি প্রতিক উর রহমান ও রাজ্য কমিটির সদস্য আকাশ কর।
এরপরই হঠাৎ করে একটি জায়গা থেকে স্রোতের মতো দ্রুত গতিতে মিছিল বের করা হতে থাকে। যেটা আটকানোর মতো বাধা পুলিশ আর দিতে পারেনি। এদিকে রাস্তায় থাকা পুলিশ যে মিছিল আটকাবে, সেই উপায়ও নেই কারণ, নির্দিষ্ট রুটে না গিয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে যেতে থাকে। ওদিকে সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে একটা দল বিধানসভা চত্বরে পৌঁছে যায়। দুটো মিছিল নিয়ে যখন পুলিশ হিমসিম খাচ্ছে ঠিক তখনই বিধানসভার গেটে পৌঁছে যায় সৃজন। এদিকে হাওড়া স্টেশনের পরে এবং যোগাযোগ ভবনের আগে মিছিল দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন, পুলিশের অনুমতি নেই, বিধানসভা অভিযানে অনড় এসএফআই! অশান্তির আশঙ্কা
আরও পড়ুন, বইমেলায় পাঁচ দিনেই লক্ষ্য পূরণ করল এসএফআই, স্টলে দুরন্ত চমক দিল বাম ছাত্ররা
প্রতিক উর রহমান বলেন, "মিছিল করব বলেছিলাম করে দেখিয়েছি। বিধানসভায় পৌঁছাব, বলেছিলাম পৌঁছে গিয়েছি। আমাদের রোখা এই পুলিশের কাজ নয়। এই মিছিল নিয়েও বিধানসভায় পৌঁছে যেতে পারতাম। কিন্তু আমরা শৃঙ্খলাবদ্ধ সংগঠন। দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ আমরা করি না।"