রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে পঞ্চায়েত নির্বাচন সমন্বয় কমিটি গড়েছিল রাজ্য। প্রাক্তন মন্ত্রী ও রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীকে ইনচার্জ করে গড়া কমিটিতে তিন সহকারী ইনচার্জের মধ্যে ছিলেন সৌমিত্র। সাংগঠনিক ভাবে তাঁকে রাঢবঙ্গ জোনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত জুন মাসে এই কমিটি গড়া হলেও, কমিটির কাজ নিয়ে কমিটির সদস্য ও জেলা নেতৃত্ব সন্তুষ্ট ছিলেন না।
advertisement
আরও পড়ুন: বঙ্গ বিজেপির কোর কমিটিতে নতুন ৮ মুখ
গত ১৬ ও ১৭ অক্টোবর হেস্টিংসে দু' দিনের বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনাও হয়। এর পরেই ১৭ অক্টোবর বিকালে সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার তৈরি করে দেওয়া রাজ্যের জন্য ২০ সদস্যের কোর কমিটির তালিকা প্রকাশিত হ.। সেই তালিকায় জায়গা পাননি সৌমিত্র। পরে, রাজ্যের যুব, মহিলা সহ মোট ৬টি মোর্চার ইনচার্জদের ঘোষিত তালিকাতেও সৌমিত্রকে বিবেচনা করেনি কেন্দ্র ও রাজ্য নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, এর পরেই পঞ্চায়েতের কমিটি ও রাঢবঙ্গের দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দেবার কথা রাজ্য সভাপতিকে জানিয়ে দেন সৌমিত্র।
ঘনিষ্ঠ মহলে সৌমিত্র নাকি বলেছেন, রাজ্যের সহ সভাপতি হিসাবে তাঁকে কোনও দায়িত্বই দেওয়া হয় না। তাঁর মতামতের যখন কোনও মূল্য নেই, তখন তিনি শুধু তাঁর নিজের সংসদীয় কাজ ও এলাকা নিয়েই থাকতে চান। সৌমিত্র ঘনিষ্ঠদের মতে, কোর কমিটিতে জায়গা না পাওয়ার পর, সৌমিত্র আশা করেছিলেন, রাজ্য যুব মোর্চার প্রাক্তন সফল সভাপতি হিসাবে তাঁকে ইনচার্জ করা হবে। কিন্তু, তার পরিবর্তে সাধারন সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পলকে দায়িত্ব দেওয়ায় সৌমিত্র রাজ্য নেতৃত্বের উপরে হতাশা গোপন রাখতে চান নি। রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করতেই কার্যত তড়িঘড়ি ইস্তফা দিয়ে দেন সৌমিত্র।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটের আগে CAA অস্ত্রে শান... বনগাঁয় আরও 'বড়' পূর্বাভাস শোনালেন শুভেন্দু অধিকারী
যদিও, সৌমিত্রের এই বিদ্রোহী মনোভাব নতুন কিছু নয়। বিগত রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের জামানাতেও যুব মোর্চার সাংগঠনিক রদবদলের প্রতিবাদে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করেন তিনি। দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে বার্তা দেন সৌমিত্র। যদিও, সৌমিত্রর সেই প্রতিবাদ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। কেন্দ্রের চাপে শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহে ইতি টানেন তিনি। এবারেও, রাজ্যের দায়িত্ব বণ্টনের সমালোচনা করে সৌমিত্র বলেছেন, অযোগ্য লোকেদের দায়িত্ব দিলে শুধু পঞ্চায়েত নয়, ২৪- এর লোকসভা ভোটেও দল টের পাবে।
তবে, এত সবের পর, সৌমিত্র কতদিন তার বিদ্রোহ জারি রাখতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় রয়ছে অনেকেরই। দলেরই একাংশ বলছে, আসলে সব ক্ষোভ, বিক্ষোভইতো পদ পাওয়া আর না পাওয়াকে ঘিরে। ফলে, এসব জারিজুরি বেশিদিন স্থায়ী হবে না।