সম্প্রতি বাংলার রেশন দুর্নীতি মামলায় বাকিবুর রহমান নামে জনৈত ডিলারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেছিলেন তদন্তকারীরা৷ সেখান থেকেই বাকিবুরের বিপুল সম্পত্তির উৎস নিয়ে সন্দেহ জাগে তদন্তকারীদের মনে৷
আরও পড়ুন: নাগেরবাজারে তিন তিনটে ফ্ল্যাট! জ্যোতিপ্রিয়ের আপ্ত সহায়কের বাড়িতেও ইডির হানা
ইডি সূত্রে খবর, বাকিবুরের রাইস মিল থেকে খোলা বাজারে বিক্রি হত আটা। গত তিন বছরে ৩ হাজার ৮২১ কেজি আটা বাজেয়াপ্ত করেছিল রাজ্য পুলিশ। সেই অনুসারে এফআইআর হয়েছিল তিনটি। এফসিআই- এর পাঠানো গমের ২০-৩০ শতাংশ হিসেবে গরমিল থাকত। গম থেকে আটা তৈরি পরে বেশ কিছু অংশ খোলা বাজারে বিক্রি হত বলে অভিযোগ।
advertisement
কী ভাবে হতো এই দুর্নীতি? কী বলছেন তদন্তকারীরা? সূত্রের খবর, মিল মালিকেরা রেশন সামগ্রীর বিনিময়ে ওজন মেনে কড়ায় গণ্ডায় মিটিয়ে নিতেন টাকা৷ কিন্তু, সেই টাকার বিনিময়ে দেওয়া রেশন সামগ্রীর ওজনে চলত বিস্তর গরমিল৷ কেমন ছিল সেই গরমিল?
সূত্রের খবর, প্রতি ১ কেজি আটার দাম নিয়ে তাতে অন্তত ২০০ গ্রাম আটা কম দেওয়া হত, কখনও কখনও সেই ওজন ৪০০ গ্রামও হয়ে যেত৷ অর্থাৎ, ১ কেজি আটার বিনিময়ে কখনও কখনও ৬০০ গ্রাম আটাও পেতেন সরকারি সরবরাহকারীরা৷ কিন্তু, অভিযোগ, এই গরমিলের কথা দু’পক্ষই জানত৷
ইডি সূত্রের দাবি, বাকিবুর অবশ্য তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, আটা সরানোর পরিমাণ ছিল ৫ থেকে ১০ শতাংশ মতো৷ সেই আটা সরিয়ে খোলা বাজারে বিক্রি করে যে লাভ হত, তা নিয়ে হত ভাগ বাটোয়ারা৷ লভ্যাংশ পেতেন মিল মালিক, রেশন সরবরাহকারী থেকে শুরু করে মধ্যস্থতাকারীরা৷
কারা ছিল এই মধ্যস্থাকারী? কোথায় পৌঁছত লভ্যাংশের এই টাকা? সে সব জানতেই তৎপর ইডির গোয়েন্দারা৷
সূত্রের খবর, বাকিবুরের একাধিক ভুয়ো কোম্পানি ছিল। রেশনের আটা খোলা বাজারে বিক্রি করে টাকা সরাতে (যার মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করা হত) এই ভুয়ো কোম্পানি খুলেছিল বাকিবুর। প্রায় ৮ থেকে ১০ বছর ধরে এই রেশন দুর্নীতি চলত, দাবি ইডির।
শুধু বাকিবুর নয়, তার আগের ৩ প্রজন্ম এই কারবার করত বলে ইডি সূত্রে খবর। তবে রেশন দুর্নীতি বাকিবুরের সময়ে ২০২০- ২২ সাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি হয়েছিল।
যেসব মাল বাজেয়াপ্ত করেছিল রাজ্য পুলিশ, সেখানে বাকিবুরের কোম্পানির স্ট্যাম্প ছিল। ফলে সেই আটা যে বাকিবুরের রাইস মিলের সে ব্যাপারে নিশ্চিত গোয়েন্দারা।